শিলিগুড়ি সেভক রোডের গায়ে অন্যরকম এক সম্প্রীতির উপাসনাস্থল

বাপি ঘোষ ঃ সেখানে হিন্দু মুসলিম খ্রীষ্টান কোনও বিরোধ নেই, সেখানে দিনরাত সবসময় বিভিন্ন জাতি বিভিন্ন ধর্ম আর বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের মধ্যে চলে শ্রদ্ধা নিবেদন আর বিভিন্ন জনের বিভিন্নরকম মানত। ভক্তজনেরা বিশ্বাস করেন বাবার কাছে প্রার্থনা বা মানত করলে বাবা শোনেন।
ব্যস্ততম শিলিগুড়ি সেভক রোডের যে স্থানে এল আই সি অফিস তার ঠিক পিছনে বছরের পর বছর ধরে সামান্য এক চিলতে জমির ওপর একটি স্থান বহু মানুষের কাছে এক অন্যরকম সম্প্রীতির উপাসনাস্থল হয়ে উঠেছে।
সেই উপাসনাস্থলে শনিদেবের মূর্তি যেমন আছে তেমনই বজরংবলীর মূর্তি রয়েছে। আবার শীতলা মায়ের পুজোও হয় সেখানে। এসবের মধ্যেই রয়েছে পীর বাবার সমাধি। সেই সমাধি স্থানে নিয়ম করে অনেকেই পুজো দেন, মানত করেন। চাদর চড়ান। মানতে ফল হলে অনেকেই সমাধি স্থানে সোনার টিপও দিয়ে এসেছেন। সেই পীরবাবাকে ঘিরেই রয়েছে অনেক গল্প এমনকি স্বপ্নাদেশ পাওয়ার ঘটনাও।ব্যস্ত সেভক রোডের জীবন বীমা অফিসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কজনইবা ভাবেন একসময় ওই স্থান ছিল কবরনগরী??!!!
শিলিগুড়ি শিবমন্দিরের নিউ রঙ্গিয়াতে বাড়ি ৮৩ বছর বয়স্কা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা শান্তিলতা রায়ের। আজও শান্তিলতাদেবীর চোখের সামনে ভেসে ওঠে পুরনো বাঁশি পাল কলোনিতে তাঁর মৃত স্বামী অধীর রায়কে কবরস্থ করার ঘটনা।তাঁর দাবি, ১৯৬৯ সালেই ওই স্থানে শেষ কবর দেওয়া হয়েছিল তাঁর স্বামীকে।তবে তারও বহু আগে এমনকি ব্রিটিশের সময়ও বহু ইংরেজ সাহেব যারা কর্মসূত্রে শিলিগুড়ি আসতেন তাদের কারও মৃত্যু হলে শিলিগুড়ি সেভক রোডের পাশেই রীতি অনুযায়ী কবর দেওয়া হোত। সেসবের আজ আর কোনও অস্তিত্ব দেখা যায় না। সত্তরের দশক থেকে শিলিগুড়িতে শুরু হওয়া প্রবল জনস্রোতের চাপে হারিয়ে যায় সেইসব কবরস্থান। তবে যুগের পর যুগ পার হলেও আজও হারিয়ে যায়নি পীরবাবার সমাধি, এক অন্যরকম সম্প্রীতির উপাসনাস্থল——