জলপাইগুড়ির মাশকলাইবাড়ির এক মন্দিরে প্রতিদিন পুজো হয় নেতাজির

নিজস্ব প্রতিবেদনঃরাত পোহালেই দেশনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন। দেশ জুড়ে চলছে তারই প্রস্তুতি। এরই মাঝে শুক্রবার আমরা এসে হাজির হলাম জলপাইগুড়ি শহরের নেতাজি মন্দিরে। জলপাইগুড়ি মাশকলাইবাড়ি এলাকায় অবস্থিত একটি হনুমান মন্দিরে বিভিন্ন দেবদেবীর সাথে পূজিত হন দেশনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা এই রীতি আজও অটুট রয়েছে এই মন্দিরে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ১৯৬৬ সাল নাগাদ জলপাইগুড়ি মাশকলাইবাড়ি শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় এসেছিলেন এক সাধূ। যিনি প্রথমে একটি মন্দির নির্মান করেছিলেন। পাশেই তিনি ছাপড়া ঘর করে থাকতেন। তিনি দিনের মধ্যে বেশিরভাগ সময় এই মন্দিরে ধ্যান করতেন। তার হাত ধরে এই হনুমান মন্দির স্থাপিত হয় এবং তিনিই এই মন্দিরে অন্যান্য দেবদেবীর সাথে নেতাজি সুভাসচন্দ্র বসুর মর্মর মূর্তি বসিয়ে বছরভর পূজো করতেন। সেই নিয়ম আজও বহাল রয়েছে।

মন্দিরের পুরোহিত অর্জুন দাস বলেন, এই মন্দিরে সারাবছর দেবদেবীর সাথে নেতাজির পূজো দেওয়া হয়। প্রতিদিন মানুষ এসে এখানে পূজো দেয়। আগামীকাল ২৩ শে জানুয়ারি। তার জন্মদিন। প্রচুর পরিমানে মানুষ আসবেন।স্থানীয় বাসিন্দা তথা কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত বললেন, মন্দিরে দেবতার সাধনা করা হয়। আর কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা নিজেদের কাজের জোরে দেবতার স্তরে পৌঁছে যান। দেশনায়ক সুভাষ চন্দ্র বসুকে আমরা সেই জায়গায় স্থান দিয়ে থাকি। যিনি শুধুমাত্র দেশকে স্বাধীন করার তাগিদে লড়াই করেননি। তিনি আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক ব্যাপ্তি পাবে,সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা পাবে, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হবে এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাই এহেন মানুষকে আমরা দেবতার জায়গা দিয়ে থাকি।আমি এই এলাকার বাসিন্দা হবার সুবাদে ছোটবেলা থেকে এই রেওয়াজ দেখে আসছি। এই দৃশ্য দেখে আজও রোমাঞ্চিত হই।

নতুন গাড়ি কিনে মন্দিরে পূজো দিতে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা শুক্লা রায়। তিনি জানালেন, হনুমান মন্দিরে এসে দেখলাম এখানে নেতাজির পূজো হয়। দেখে খুব ভালো লাগলো। আমিও পূজো দিলাম।জলপাইগুড়ি নেতাজি সুভাসচন্দ্র বোস ফাউন্ডেশনের সম্পাদক গোবিন্দ রায় বলেন, নেতাজি সুভাসচন্দ্র বসুকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ঈশ্বর জ্ঞানে পূজো করেন। কিন্তু রাজ্যে বিরল এই ধরনের মন্দির। এখানে ৩৬৫ দিন পূজোর পাশাপাশি ২৩ শে জানুয়ারি সাড়ম্বরে পুজো দেবার রীতি রয়েছে। মানুষের এই ভাবাবেগকে আমরা সম্মান জানাই।