নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ শিলিগুড়ি কলেজপাড়ায় থাকেন প্রশান্ত অধিকারী এবং তার স্ত্রী মিতালি অধিকারী।একজন ষাটের ঘর অতিক্রম করেছেন,আর একজন ষাটের কাছাকাছি। আজও এই দম্পতির সন্তান হয়নি।এখন আর সন্তানের আশাও করেন না।কিন্তু তাদের সন্তান না থাকার কস্ট মিটিয়ে চলেছে সঙ্গীত। তাদের কাছে গানবাজনাই হল সন্তানের মতো।এই বার্ধক্যে রবীন্দ্রসঙ্গীত,নজরুল গীতি,ক্ল্যাসিক্যালই তাদের কাছে বড় শক্তি।আরও উল্লেখ করার মতো দিক হল এই বয়সেও তারা গানবাজনা শিখছেন। শিলিগুড়ি নবগ্রামের সঙ্গীত শিক্ষক নির্মল গাঙ্গুলি তাদের পালা করে গান শিখিয়ে চলেছেন।নির্মলবাবুর নির্মল উৎসাহ তাদের আরও উদ্দীপ্ত করছে।মিতালিদেবী জানালেন,এই বয়সে সঙ্গীতই তাদের সন্তান।
শিলিগুড়ি নবগ্রামে বাড়ি সঙ্গীত শিল্পী নির্মল গাঙ্গুলির।ছোটবেলা থেকেই তার নেশা সঙ্গীতের প্রতি।প্রথমে রেডিওতে গান শুনে শুনে নেশা।তারপর গান শেখা।প্রথমে গোপিমোহন রায়চৌধুরী, তারপর সঞ্জয় চক্রবর্তী, পরে ধনঞ্জয় চক্রবর্তী।পরে এলাহাবাদ থেকে সঙ্গীত প্রভাকর ডিগ্রী। রবীন্দ্রসঙ্গীত,নজরুল, আধুনিক,হিন্দি , বাংলা মিলিয়ে এক হাজারেরও বেশি গান তার কন্ঠে তোলা আছে।কুড়ি বছর আগে খুলেছেন নিজস্ব সঙ্গীত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান সুরবিতান।শুরুতে সেখানে পাঁচজন গান শিখতো এখন তা ৭৫ ছাড়িয়েছে।প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা তার গান শিলিগুড়ির একটি অনুষ্ঠানে শুনে তারিফ করে গিয়েছেন। ইসলামপুরে শিল্পী লোপামুদ্রার সঙ্গেও এক মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছেন। নির্মলবাবু জানালেন,তারা শীঘ্রই একটি গ্রুপ খুলতে চলেছেন। অনেক শিল্পী মঞ্চ পায় না।ফলে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে গানবাজনার প্রতি।সেদিকে তাদের নজর থাকবে।সঙ্গীতের পাশাপাশি তবলাও বাজান নির্মলবাবু।তার মেয়ে বনশ্রী গাঙ্গুলিরও উৎসাহ আছে এর প্রতি।স্ত্রী পর্না গাঙ্গুলির কাছ থেকেও তিনি উৎসাহ পান। বিভিন্ন প্রতিভাবানকেও উৎসাহ দিচ্ছেন তিনি। বিভিন্ন রকম ছাত্রছাত্রী রয়েছে তার কাছে।তবে তাদের মধ্যে কলেজপাড়ার নিঃসন্তান দম্পতি যেভাবে সঙ্গীত চর্চার মধ্যে ডুব দিয়ে সন্তান না থাকার দুঃখ ভুলে থাকছেন তা সত্যি ব্যতিক্রমী।নির্মলবাবু বলেন,সঙ্গীত একটি ওষুধের মতো।সমাজ ও সভ্যতাকে সুস্থ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে সুস্থ সঙ্গীত চর্চার জুড়ি নেই।