শিল্পী পালিতঃ শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়ায় থাকে নিগম দেবনাথ। সে তাঁর সঙ্গীত চর্চার বিভিন্ন দিক লিখে পাঠিয়েছে। তবে বিভিন্ন প্রাদেশিক গানের সঙ্গে বাউল, কীর্তন গানের মিশ্রণ করতে ভালোবাসে সে । তাঁর লেখাতেই পড়ুন—
আমার নাম নিগম দেবনাথ। বাবার নাম রতন দেবনাথ, মা জয়া দেবনাথ। আমি মা বাবার প্রথম সন্তান।শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায় থাকি। কলেজে বি এস সি পড়ছি সাথে গানের চর্চাও চলছে। জলপাইগুড়িতে আমার মামাবাড়ি। মামা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীর কাছে রবীন্দ্র সংগীত শুনতাম মন দিয়ে। কিশোর কুমারের গানে মামা খুব আসর জমাতেন, সকলের প্রশংসা পেতেন। এসব দেখা ও শোনার মাধ্যমে আমি গানের জগতে ঢুকে পড়ি। শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার বিপ্লব দে সরকারের কাছে গিটার শিখেছি। আমি সব ধরণের গান গাই কিন্তু সবচেয়ে আনন্দ পাই লোক সংগীতে। সব ধরণের গান শুনতে খুব ভালবাসি। অন্য ভাষার গান শুনতেও ভালবাসি। কিশোর কুমার , মান্না দে , অরিজিত সিং এর গান আমার খুব প্রিয়। ঠাকুর নিগমানন্দের বিভিন্ন সংঘে যোগদান করার পরেই ভক্তিমূলক গানের ওপর আগ্রহ জন্মে। আমার কিছু সখ আছে। ঠাকুর মহারাজের , মা, বাবা, গুরুজনের আশীর্বাদ পেলে কোনদিন হয়তো সফল হবো। যেমন রসিদ খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীত শেখার, কার্তিক দাস বাউলের কাছে গান শেখারও খুব ইচ্ছে। ফোক ফিউশন আমার খুব পছন্দের। দুঃখের বিষয় গিটারে এশিয়ার ফার্স্টেস্ট ফিংগারিং ছিল বাংলাদেশের আইয়ুব বাচ্চুর। তার কাছে আমার শেখা হল না। একবছর আগে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এছাড়া সুযোগ পেলে প্লে ব্যাক করার ইচ্ছে আছে। ফোক ফিউশন নিয়ে চেষ্টা করছি কাজ করার। বাংলার সাথে রাজস্হানী ফোকের মিশ্রণ । আরও অন্যান্য প্রাদেশিক গানের সাথে আমাদের বাউল, কীর্তন, গানের মিশ্রণ করার চেষ্টা করি। এর মধ্য দিয়ে আমি যেন মানুষের সাথে মানুষের একাত্মতা খুঁজে পাই। গানের সুর তো কোন দেশ জাতি বোঝে না । আমার মনে হয় আমরা সবাই একই মাটির ওপর দাঁড়িয়ে। মাটির কাছাকাছি মানুষের গান গাইতে আমিও খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। গীটার, , বাঁশি, শ্রীখোল , দোতারা , এছাড়াও পুরোন দিনের বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার আমার খুব পছন্দের। লুপ্ত প্রায় বাদ্যযন্ত্রের ওপরেও আমার আগ্রহ আছে। বিষ্ণু কান্ত বিশ্বাস ‘রামায়ন ‘ গায়ক হিসেবে যিনি এ অঞ্চলে প্রখ্যাত তার আগ্রহে তার সাথে রামায়ন গান গাই। ২০১৭ সালে শিলিগুড়ি কলেজ সোস্যাল প্রোগ্রামে ফোক ফিউশন গেয়ে সকলের মন জয় করেছিলাম। ২০১৩ সালে ছাত্র যুব উৎসবে আধুনিক গানে দার্জ্জিলিং ডিস্ট্রিক্টে প্রথম হয়েছিলাম। দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্টের হয়ে সেবার রাজ্য স্তরে সল্টলেক স্টেডিয়ামে পারফর্ম করি।
আমার ছাত্র ছাত্রীদেরও সবরকম গান শোনার ওপর উৎসাহ দিই। খুব যত্ন নিয়ে শেখাই। ওদের মধ্যে নভস্বান মণ্ডল, শ্রেয়ান দেবনাথের নাম করতে হয়। ওদের আগ্রহ ও গানের প্রতি ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করে। ইচ্ছে হয় এদের নিয়ে একসাথে দলগত ভাবে কাজ করবার।