শিল্পী পালিতঃ শিলিগুড়ি সুকান্ত পল্লীতে থাকেন রুপলেখা চ্যাটার্জী। সঙ্গীত চর্চা নিয়ে তিনি ব্যস্ত থাকেন। আর শিশুদের মধ্যে সঙ্গীত চর্চা প্রসারের জন্যও কাজ করে চলেছেন। পড়ুন তাঁর আত্মকথায় —
আমি রুপলেখা চ্যাটার্জী, শিলিগুড়ি সুকান্তপল্লীতে থাকি।সঙ্গীত জীবনের বিষয়ে বলার বা লেখার মতো তেমন কিছু নেই। তবে আমার জীবনের একটা অংশ জুড়ে এই সঙ্গীত সব সময় আমার সাথে রয়েছে। জন্ম আমার মামাবাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে। কিন্তু বাবার চাকরি সূত্রে শিলিগুড়িতেই আমার বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা, গানবাজনা করা। খুব ছোট্ট বয়সে মায়ের হাত ধরে আমার সঙ্গীত জীবনে আসা। আজও মা অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন। মা নিজেও যেহেতু তার জীবনে কিছুদিন শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চা করেছিলেন সেহেতু মা ছোটো থেকেই আমার মধ্যেও এই সঙ্গীত এর ওপর একটা ভালোবাসা জাগিয়ে তুলেছিলেন। মায়ের কাছে কিছুদিন গান শেখার পর শ্রদ্ধেয শ্রী দীপক মুখার্জী মহাশয়ের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করি এবং সেখান থেকেই আমি বি, মিউজ, পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করি। এরই সাথে সাথে কলকাতাতে গিয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখার স্বপ্ন দেখতে শুরু করি এবং শিলিগুড়িতে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সুযোগ্য ছাত্র শ্রী সঞ্জয় দুবে মহাশয়ের কাছে বেশ কিছুদিন সঙ্গীতের তালিম নিতে থাকি।
কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর বাবার সহযোগিতায় কলকাতা গিয়ে গুরুজী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী মহাশয়ের কাছে তালিম নেওয়ার সুযোগ পাই এবং আমার স্বপ্ন সার্থক হয়। তখন থেকে আজও আমি ওনার সান্নিধ্যে থেকেই সঙ্গীত চর্চা করে চলেছি। এরই মাঝে কলকাতাতে বিবাহ হয় কিন্তু স্বামীর কর্মসূত্রে আবার উত্তরবঙ্গে ফিরে আসি। তারপর কয়েক বছর সাংসারিক কারণে কলকাতায় গিয়ে তালিম নেওয়ায় ছেদ পড়ে। কিন্তু অনুশীলন বজায় রাখার জন্য শিলিগুড়ির প্রতিষ্ঠিত বেতার শিল্পী শ্রী দেবপ্রতিম রায় মহাশয়ের কাছে কিছুদিন সঙ্গীত চর্চা করতে থাকি। তৎপরবর্তী সময়ে গুরু অজয় চক্রব্তীর নির্দেশে এবং তত্ত্বাবধানে এখনও পর্যন্ত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিয়ে চলেছি। বিবাহের পরবর্তী সময় থেকে এখনও পর্যন্ত আমার স্বামীর অনুপ্রেরণা ও সহযোগীতাই আমাকে আমার সঙ্গীত সাধনাতে চালিয়ে যেতে সাহায্য করে চলেছে।
সঙ্গীত জীবনে তেমন বড় কিছু না হলেও ছোটো থেকে বেশ কিছু সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় রাগ সঙ্গীত, ভজন, নজরুলগীতি পরিবেশন করে পুরষ্কৃত হয়েছি এবং বেশ কিছু গুণী শিল্পীর সান্নিধ্যে সঙ্গীত পরিবেশন করে তাদের আশীর্বাদ পেয়েছি যা আমার সঙ্গীত জীবনের বড়ো পুরস্কার। সাথে বেশ কিছু মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করে শ্রোতাদের ভালোবাসা পাই যা আমাকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেয়।
সঙ্গীত চর্চা ও পরিবেশন ছাড়া ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের মধ্যে রাগ সঙ্গীত এর প্রসার ও ভালোবাসা জাগানোর জন্য আমি একটি সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়েছি যেখানে বেশ কিছু ছেলে মেয়ে নিয়মিত সঙ্গীত চর্চা করে।
গান বাজনা করা ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে এবং বিভিন্ন রকমের রান্না করা ও আড্ডা মারতে খুব ভালোবাসি। সর্বোপরি আমার বাবা মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে পরিবারের ও অনুরাগীদের ভালোবাসাকে পাথেয় করে গুরুজীর দিক নির্দেশিত পথে সঙ্গীত জীবনে এগিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য।।।