নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ উত্তরবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আয়োজিত হলো শিলিগুড়ি উত্তর কন্যায়। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ভিআরডিএল ল্যাবে জমে থাকা স্যোয়াবের অবিলম্বে পরীক্ষা, শিলিগুড়ি পুরসভার অন্তর্গত জলপাইগুড়ি জেলার ১৪ টি ওয়ার্ডের রোগীদের দার্জিলিং জেলায় চিকিৎসা এবং উপসর্গহীন করোনা রোগীদের আলাদা হাসপাতাল তৈরী সহ একাধিক আলোচনা হয় ওই বৈঠকে।
উত্তর কন্যায় আয়োজিত এদিনের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি ডিভিশনাল কমিশনার অজিত রঞ্জন বর্ধন, উত্তরবঙ্গে কোভিডের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ স্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্ত রায়, দার্জিলিং-এর জেলা শাসক এস পুন্যমবালম, দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য্য, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ সুপার ডাঃকৌশিক সমাজদার সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
প্রায় দেড় ঘন্টার এই বৈঠকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ভিআরডিএল ল্যাবে জমে থাকা স্যোয়াবের অবিলম্বে পরীক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মেডিকেলে যে ৫ হাজার সোয়াব জমে আছে সেই সমস্ত স্যোয়াবের টেস্ট রিপোর্ট আগামী বুধবারের মধ্যে শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি ডিভিশনাল কমিশনার অজিত বর্ধন। এই ৫ হাজার স্যোয়াবের মধ্যে ৩ হাজার স্যোয়াবের টেস্ট রিপোর্ট আজকে রাতের মধ্যে এবং বাকি ২ হাজার স্যোয়াবের টেস্ট রিপোর্ট বুধবারের মধ্যে তৈরী করে সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, বিভিন্ন জেলা থেকে কত পরিমান স্যোয়াব উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে পাঠানো যাবে, তাও নির্ধারিত হয়েছে এই বৈঠকে। বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিদিন আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলার ২০০ টি করে, দার্জিলিং জেলার ১৮০ টি করে এবং কালিম্পং জেলার ৭০ টি করে স্যোয়াব পরীক্ষা করা হবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ভি আর ডি এল ল্যাবে।
অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের ভি আর ডি এল-এ বর্তমানে মাত্র দুটি আরটিপিসিআর মেশিন থাকায় প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৮৫০ টি স্যোয়াব পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা একটি আরটিপিসিআর মেশিন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে আনার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দপ্তর। এর ফলে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের ভি আর ডি এল ল্যাবে প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১২৫০ টি স্যোয়াব টেস্ট করা যাবে। আর অনেকটাই স্যোয়াব ব্যাকলগের সমস্যা সমাধান হবে এর ফলে।
অপরদিকে, শিলিগুড়ি পুর সভার ১৪ টি ওয়ার্ড শিলিগুড়ির শহরের অন্তর্ভুক্ত হলেও, সেগুলি জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে পড়ছে। এর ফলে নিয়ম অনুযায়ী, এই ১৪ টি ওয়ার্ডের কোভিড রোগিদের জলপাইগুড়ি বিশ্ব বাংলা স্টেডিয়ামের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন রকম সমস্যা তৈরী হচ্ছে। এখন থেকে এই ১৪ টি ওয়ার্ডের কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দার্জিলিং জেলাতেই হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
পরিযায়ী শ্রমিকেরা এ রাজ্যে আসার পর থেকে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে উত্তরবঙ্গে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। এর ফলে কোভিড হাসপাতালগুলিতে বেড সংকুলান করা যাচ্ছে না। এই সমস্যা মেটাতে উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের জন্য আলাদা হাসপাতাল তৈরী করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওএসডি ডাঃ সুশান্ত সরকার।