বাদশা নীল ঘোষঃ সৈয়দ মুজতবা আলী লিখে গেছেন, ‘ইংরেজের বাড়ি, হিন্দুর শাড়ি, মুসলমানের হাঁড়ি।‘ এই উপমহাদেশের নিরিখে বিচার করলে দেখা যাবে এই হাঁড়িতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব আছে ‘মোঘল’দের। আর কথায় তো আছেই, পড়েছি মোঘলের হাতে, খানা খেতে হবে সাথে। সেই মোঘলদের এদেশে আগমন ১৩৯৮ সালে তৈমুর লংয়ের আক্রমণের হাত ধরে। তবে পাকাঘর প্রথম বাঁধেন বাবর (১৫২৬-১৫৩০)। তখন থেকেই এই উপমহাদেশের পাকঘরে আসে নতুন রসনার রোশনাই। মোঘল খানার ইতিহাস ঘটনাবহুল ও সুবিস্তৃত।মুঘলদের হাত ধরে মোঘল ঘরানার কাবাব, মোঘলাই পরোটা, ফালুদা, কাচ্চি বিরিয়ানি,বাকরখানি বা বাখরখনি ইত্যাদির আগমন ঘটে। আসুন মোঘলাই পরোটা বানাই –
উপকরণ
কিমাভরা মোগলাই পরোটার জন্য লাগবে-
ময়দা- ৫০০ গ্রাম
গরম জল- পরিমাণ মত
কিমা (চিকেন)- ৪০০ গ্রাম
পেঁয়াজ- পেস্ট করা দুটো
ট্যামেটো পেস্ট করা একটা
রসুন ও আদা বাটা- বড় এক চামচ
লাল লঙ্কা গুঁড়ো- দু চামচ
জিরে ধনে গুঁড়ো- দু চামচ করে
বিস্কুটের গুঁড়ো – ১০ বড় চামচ
ডিম- তিনটে
জিরে গুঁড়ো দু চামচ
ধনে গুঁড়ো দু চামচ
গরম মসলা- আধ চামচ
কাঁচা লঙ্কা- স্বাদমত
নুন- পরিমাণ মত
ধনেপাতা-
রিফাইন তেল
প্রণালী :
প্রথমে বিস্কুটের পুরের মশলা –
কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ আদা আর রসুনের পেস্ট দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে, এরপর এতে অল্প জিরে ধনে আর হলুদ গুড়ো দিয়ে কষিয়ে, তাতে বিস্কুটের গুড়ো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে ঝুড়ঝড়ে করে।
এরপর কিমার মশলা –
কড়ইতে তেল গরম করে পেঁয়াজের পেস্ট দিতে হবে,
পেঁয়াজে রং ধরলে রসুন, আদা বাটা, জিরে, ধনে গুড়ো , হলুদ, লঙ্কা গুড়ো দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে, এরপর টমেটো পেস্ট আর নুন দিয়ে কষিয়ে নিয়ে চিকেনের কিমা দিয়ে মিনিট দশেক ভালো করে ফ্রাই(ড্রাই করে) করে নিতে হবে।
কিমা রান্না হলে ওপর দিয়ে লেবুর রস এবং ধনেপাতা ছিটিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
বড় কানা উঁচু পাত্রে ময়দা আর নুন মেশান।
অল্প তেল দিয়ে ময়ান মাখুন।
অল্প অল্প করে জল দিয়ে মোটামুটি নরম ময়দার ডো বানান।
ভেজা কাপড় দিয়ে ময়দার ডো পনের মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন।
এরপর নুন, লঙ্কা ধনেপাতা, পেয়াজ কুচি আর বিস্কুটের মশলা দিয়ে ডিম ফেটিয়ে নিন ভালো করে।
পনের মিনিট পরে ময়দার তাল থেকে সমান অংশ নিয়ে কয়েকটি বল বানান।
বেলনি দিয়ে মোটামুটি পাতলা করে চৌকাকৃতি করুন টেনে টেনে।
(সবচেয়ে ভালো হয় পিঁড়ির ওপরে বা কাউন্টার টপের ওপরে তেল লাগিয়ে বেললে। )
এরপর তিন বড় চামচ কিমা আর বিস্কুট দিয়ে ডিমের মিশ্রণ দিন।
কিমা এবং ডিম আঙুল দিয়ে মিশিয়ে নিন।
এবার দুটি বিপরীত পাশকে মাঝে এনে ভাঁজ করুন।
অন্য দুটি বিপরীত পাশকেও একই প্রক্রিয়ায় মাঝখানে এনে ভাঁজ করুন। একটু জল বুলিয়ে চেপে দিন।
ব্যাপারটা অনেকটা এমন হবে, মনে করুন বন্ধ চৌকো খামের ভেতরে চিঠি।
এক্ষেত্রে খাম হল ময়দা, চিঠি হল পুর আর খামের মুখ আটকানোর আঠা হল জল।
চাটু গরম করে সাবধানে পরোটা দিন।
কম আঁচে ভাজুন যাতে ভেতরের ডিম রান্না হওয়ার আগেই বাইরের ময়দার অংশটি সোনালি রং না ধরে।
ডিম রান্না হলে এবং পরোটার দুইপাশ সোনালি রং হলে ছোট ছোট করে কেটে স্যালাড এবং সস আর আলুর সবজির সাথে পরিবেশন করুন।
( বিভাগীয় সম্পাদিকাঃ শিল্পী পালিত)