শিল্পী পালিতঃদুর্গা পুজো, কালী পুজো,ছট পুজো, কার্তিক পুজোর পর্ব শেষ। অনেক দিন বাদে আমি আত্মকথা বিভাগের লেখা নিয়ে এলাম খবরের ঘন্টার পাঠকদের জন্য। এবার মেলে ধরা হল বাঁকুড়ার সলিল সিংহমহাপাত্রের কথা।
আমি হলেম গাঁয়ের ছেলে/গাই গাঁয়েরি গান/গাঁয়েই আমার জন্ম ভূমি/গাঁয়েই আমার প্রাণ।
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার সিমলাপাল থানার প্রত্যন্ত গ্রাম চরাবেদিয়া।১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি আমার জন্ম। নাম-সলিল সিংহ মহাপাত্র,বাবা মাননীয় রঘুনন্দন সিংহ মহাপাত্র, মা মাধবী সিংহ মহাপাত্র। বাবা শিক্ষক, মা গৃহবধূ। তখন একান্নবর্তী পরিবার ছিল। তৎকালীন সময়ে শিক্ষকদের বেতন ছিল খুব অল্প, অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। আমরা চার ভাই বোন, আমি সবার বড়। গ্রাম থেকে আলপথ ধরে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে আমার প্রথম শিক্ষার বিদ্যালয়। গোতড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়।
খুব অল্প বয়স থেকেই লেখালেখিতে নেশা ছিল।বাবা সংস্কৃতের শিক্ষক ছিলেন, বাংলা ভাষায় অগাধ জ্ঞান। লেখালেখির জন্য তিনি আমাকে উৎসাহ দিতেন।লেখার জগতে তিনিই আমার প্রথম গুরু।আমার লেখার দ্বিতীয় গুরু সিমলাপাল মদন মোহন হাই স্কুলের বাংলার শিক্ষক স্বর্গীয় ভবসুন্দর বড়ঠাকুর।তার উৎসাহে আমার প্রথম লেখা হাসির নাটক “জুতা বিভ্রাট”।সিমলাপাল মদন মোহন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে মাধ্যমিক পাস করি।
উচ্চমাধ্যমিক ওই স্কুল থেকেই।তারপর ইলেকট্রনিক্স নিয়ে তিন বছরের ডিপ্লোমা।লেখা চলছিল, কিছু পত্রপত্রিকায় লেখা বেরিয়ে ছিল।সেই সময় আমার নিজের লেখা সংকলন ছাপানোর সামর্থ ছিলনা।১৯৮৯ সালে ইলেকট্রনিক্স এর ব্যবসা শুরু করি। সাথে চলে কৃষিকাজ। জীবন সংগ্রামে সফলতা লাভ করে শ্রীমতি লক্ষ্মীর সাথে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হই।দুই সন্তান, ছেলে পলাশ, মেয়ে হিমিকা।খুব কাছ থেকে গরিবি দেখেছি, তাই মাঝে মাঝে তাদের পাশে চলে যাই । তাদের আর্থসামাজিক কাঠামো নিয়ে অনেক লেখা লিখেছি, আঞ্চলিক ভাষায়। লিখেছি তাদের আচার-আচরণ, তাদের জীবিকা (চাষবাস) এবং জীবনযাত্রার মান।বর্তমানে ফেসবুকের দৌলতে অনেক মানুষের সান্নিধ্যে আছি। একটি ষান্মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করি, “পলাশ সাহিত্য পত্রিকা”।এর উৎসাহদাতা কবি বিশ্বনাথ হোতা। সবাইকে নিয়ে বর্তমানে সিমলাপালে বসবাস।
” চলে যাবো একদিন/ সৃষ্টি থাকবে স্মৃতি হয়ে/সমাজে কিছু কথা রবে/ফিরব এই সান্ত্বনা নিয়ে।”