নিজস্ব প্রতিবেদন,শিলিগুড়িঃ পড়াশোনার পাশাপাশি ভরত নাট্যম আর বাঁশিতে ডুব দিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি থানার হাতিঘিষা চা বাগানের কলেজ ছাত্রী স্নেহলতা খালকো। এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়ে ডানবস্কো সালিসিয়া কলেজে প্রথম বর্ষের কলা বিভাগে ভর্তি হয়েছে স্নেহলতা।
স্নেহলতার বাবা জেমস খালকো চা শ্রমিক। আর মা আই সি ডি এস কর্মী। আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া হলেও পড়াশোনার প্রতি খুব নজর স্নেহলতার। আবার শুধু পড়াশোনাই নয়, প্রচন্ড কষ্ট করে লড়াই চালিয়ে ও ভরত নাট্যমে ডিপ্লোমা পেয়েছে। এখন শিখছে বাঁশি।
উত্তরবঙ্গে প্রচুর বাঁশ বাগান। বাঁশ বা বেত দিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর বাঁশি হয়। একসময় এ বাঁশির জনপ্রিয়তা বা চাহিদাও ছিল বেশ। বিভিন্ন মেলায় বাঁশি বিক্রির ধুম পড়ে যেতো। সময়ের নিয়মে আর সে বাঁশির জনপ্রিয়তা নেই। নতুনদের হাতে হাতে এখন সেই পুরনো খেলনা বাশির চেয়ে আধুনিক মোবাইল, ভিডি গেম জায়গা করে নিয়েছে। ফলে তারা নিজেরা আর বাঁশিতে ফু দিয়ে নিজস্ব সৃজনশীলতা উস্কে দেওয়ার খেলার সেভাবে মেতে ওঠে না। যদিও ব্যতিক্রমতো আছেই।
এই বাঁশিতে সুর তোলার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়ে চলেছেন শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া জেভিয়ার সঙ্গীতাঞ্জলির ফাদার কল্যান কিশোর তির্কী। চা বাগানের অনেক পিছিয়ে পড়া আদিবাসী তার কাছে ঐতিহ্যমন্ডিত বাঁশির সুরে গান তোলার তালিম নিচ্ছেন। এদেরই একজন স্নেহলতা খালকো। স্নেহলতা এখন শুধু বাঁশিতে সারেগামা তুলছে। স্নেহলতা বলে, বাঁশির সুরে মনটা বেশ শান্ত হয়। বাঁশির সুর মনের সব চঞ্চলতা দূর করে। বাঁশি শেখার কাজ পুরোপুরি শেষ হলে স্নেহলতা চা বাগানের পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের বাঁশি শিখিয়ে তাদের মনকে সবুজের মতো আরও সতেজ করে তুলতে চায়। স্নেহলতা নতুন ছেলেমেয়ে সকলের কাছে অন্য বাজে নেশা না করে মিউজিকের নেশা করার আবেদন জানায়।