নিজস্ব প্রতিবেদন : ডুয়ার্সের বাগরাকোট এলাকার সোনালী চা বাগান দীর্ঘ সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে চা শ্রমিকদের এক করুন দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে। কারো ঘরে খাবার নেই, কারো ঘরে বস্ত্র নেই। প্রত্যেকেই অপুষ্টির শিকার। ঘরে ঘরে রোগ দেখা দিয়েছে। সেই সব রোগের চিকিৎসা করবার কোন সামর্থ্য নেই তাদের। এক চূড়ান্ত অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে সময় কাটছে সেই বাগানের শ্রমিকদের। শিশুদের অবস্থা আরো করুন। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ২৪শে ফেব্রুয়ারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস পিস ফাউন্ডেশন ওই বন্ধ চা বাগানে গিয়ে মানবিক কাজকর্ম করে। বাগরাকোট থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার ভিতরে বাগানটির অবস্থান। সেখানে ৫০০ টির বেশি ঘর রয়েছে। সাড়ে তিনশোর বেশি মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত। কারো সুগার, কারো ব্লাড প্রেসার, কারো কৃমির সমস্যা। আবার অপুষ্টিজনিত রোগ প্রায় প্রত্যেকের।
তাই সেই বাগানে গিয়ে জি এইচ আর পিস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করে ওষুধ বিতরণ করা হলো। স্থানীয় ব্লক সভাপতি রাজেশ ছেত্রীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন জি এইচ আর পিস ফাউন্ডেশন এর রাষ্ট্রীয় সভাপতি দীপিকা রক্ষিত বন্দ্যে, সাধারণ সম্পাদিকা বিন্দু শর্মা দাহাল, সহ-সভাপতি পম্পা রায়, কোষাধ্যক্ষ শম্পা সরকার সহ-সম্পাদিকা তানিয়া হালদার, সদস্য করুনা ছেত্রী দাহাল, প্রেরণা পান্ডে, ঋষভ ছেত্রী, সুজল গুরুং সহ আরো অনেকে উপস্থিত হয়েছিলেন। শিলিগুড়ি নিবেদিতা নার্সিংহোমের চিকিৎসক ডাক্তার উজ্জল কুমার পান্ডে এবং মালবাজারের চিকিৎসক ডাক্তার দীপক রঞ্জন দাস সেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোগী দেখেন। সেই কারণে চিকিৎসকদের সম্মানও জানানো হয় । স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে শিবির কেরকাট্টা,অনুপ শর্মা , সুনীল ওরাও, দীপ ওঁরাও প্রমূখ সেই শিবির পরিচালনার জন্য সহযোগিতা করেন। জি এইচ আর পিস ফাউন্ডেশন থেকে উপদেষ্টা জ্ঞানেন্দ্র দাহাল, পদম ছেত্রী, গোপাল সাহা, উত্তম গুরুং, দেওরাজ সোনার, মধ্যপ্রদেশ থেকে আসা অতিথি অনুপ সাক্সেনা সেখানে উপস্থিত থেকে এই শিবির সফল করতে সহযোগিতা করেন। মালবাজারের জীবন সুরক্ষা ওষুধ দোকানের অসীম বন্দ্যে ওষুধপত্র দিয়ে সেই শিবির সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেন। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত জি এইচ আর পিস ফাউন্ডেশনের সদস্যরা আন্তরিকভাবে বিশেষ করে মানবিক মুখ নিয়ে সেই প্রত্যন্ত চা বাগানে গিয়ে এই মানবিক কর্মসূচি পালন করেন। সমাজসেবী বিন্দু শর্মা বলেন, চা বাগানের হতদরিদ্র পরিবারগুলির অবস্থা এখন খুবই করুন। সরকারি রেশনে তাদের পুরোপুরি চলছে না। তাদের এখন দরকার চারদিক থেকে বিপুল সাহায্য। অপরদিকে বাগান খোলার জন্য উদ্যোগ দরকার। তবে আপাতত তাদের প্রতি মানবিক মুখ চাই। আর সেই মানবিক মুখ নিয়ে দীপিকা রক্ষিত বন্দ্যে এবং বিন্দু শর্মারা আবারও প্রমাণ করলেন তারা হতদরিদ্র মানুষের জন্য সব সময় পাশে আছেন।।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন: