বাপি ঘোষ : আড়াই বছর আগে শিশু কন্যা আরোহি ঢালির জ্বর হয়।জ্বর হওয়ার আগে আরোহি একা একাই চলাফেরা করতে পারতো।কিন্তু জ্বর হওয়ার পর ও হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলে।ওর বাবা অর্ঘ্য ঢালি এবং মা লাভলি ঢালি সোনা গহনা সব বিক্রি করে চিকিৎসার জন্য বিহারের পাটনাতে যান।কিন্তু চিকিৎসায় সুফল কিছু হয়নি।এরপর আরোহিকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু টাকার অভাবে সেই প্রক্রিয়া থমকে যায়।ওর বাবা মা চিন্তায় পড়েন,তাদের শিশু কন্যা হাঁটতে পারবে কিনা তার কোনো দিশা পাচ্ছিলেন না। দিনরাত আরোহির চিন্তায় বাবা মা এর ঘুম উবে গিয়েছিল। শেষমেষ স্থানীয় সংবেদনশীল মহিলা রুপা সেনগুপ্তের মাধ্যমে খবরটি খবরের ঘন্টার কানে আসে গত দুর্গা পুজোর আগে।খবরের ঘন্টায় আরোহিকে নিয়ে মানবিক আবেদন সম্পন্ন সংবাদ প্রচারিত হয়।বিষয়টি নজরে আসে এস জে ডি এর বোর্ড সদস্য তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী গৌতম গোস্বামীর। গৌতমবাবু গত লক্ষ্মী পুজোর দিন আরোহিকে একটি হুইল চেয়ার উপহার দিয়ে তাঁর চিকিৎসার জন্য পুরোদমে প্রয়াস চালাবেন বলে আশ্বাস দেন।আর নিজের আশ্বাস থেকে পিছিয়ে আসেননি গৌতমবাবু।অপরদিকে ভক্তিনগর শ্রদ্ধা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বিশিষ্ট সমাজসেবী পূজা মোক্তার দুর্গা পুজোর দিন আরোহিকে কুমারী রুপে পুজো করেন দেবী দুর্গার সামনে পূজাদেবী কিছু বস্ত্রও তুলে দেন আরোহীর হাতে। মানবিক মুখ নিয়ে এগিয়ে আসেন উত্তর বঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মী সুমিতা কুন্ডু।এগিয়ে আসেন স্কুল শিক্ষিকা পৃথা সেন।রাস্তার ধারে সামান্য ফার্স্ট ফুডের দোকান করেন আরোহীর বাবা অর্ঘ্য ঢালি। সেই ফার্স্ট ফুডের দোকান থেকে সংসার প্রতিপালন করাই কষ্টকর, তারপর মেয়ের চিকিৎসার জন্য অর্থ খরচ করা আরও কষ্টকর।তবুও সন্তানকে সুস্থ করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাবা অর্ঘ্য ঢালি এবং মা লাভলি ঢালি। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ পার্থপ্রতিম পানের পরামর্শ অনুযায়ী নতুন ভাবে চিকিৎসা শুরু হয়েছে আরোহীর। শুরু হয়েছে ফিজিওথেরাপি। যদিও প্রতিদিন ফিজিওথেরাপি করতে প্রায় আড়াইশো টাকা খরচ করা অত্যন্ত চাপের আরোহীর বাবা মা এর কাছে।অপরদিকে ডাক্তার পানের পরামর্শ অনুযায়ী শীঘ্রই আরোহীকে দুটি ইঞ্জেকশন দিতে হবে। একেকটি ইঞ্জেকশনের দাম ত্রিশ হাজার টাকা। আরোহীর মা লাভলিদেবী বলেন,ষাট হাজার টাকা খরচ করে ইঞ্জেকশন কেনা তাদের কাছে অত্যন্ত চাপের।কিন্তু এস জে ডি এর বোর্ড সদস্য গৌতম গোস্বামী এরজন্য মানবিক মুখ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। ডাক্তার পান আরোহীর পরিবারকে জানিয়েছেন, দুটি ইঞ্জেকশন এবং ধারাবাহিকভাবে ফিজিওথেরাপি চলতে থাকলে আরোহীর অবস্থার আরও উন্নতি হবে। আর এভাবে চললে আগামীতে ওর হাঁটাচলার ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ উন্নতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে নতুন করে আরোহীকে নিয়ে আশার আলো দেখছেন অর্ঘ্য ঢালি এবং লাভলি ঢালি। তাঁরা এরজন্য খবরের ঘন্টা, এস জে ডি এর বোর্ড সদস্য গৌতম গোস্বামী, ডাক্তার পার্থপ্রতিম পান সহ অন্য সকলের প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তবে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যাওয়ার জন্য আরোহীর বাবা মা সকলের কাছে মানবিক সহযোগিতা চান। সাহায্য করতে হলে গুগল পে নম্বর 77182 77189।চলুন না সবাই মিলে এই নিস্পাপ শিশুর পাশে দাঁড়িয়ে আগামীদিনে ওকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে দিই। চলুন না সবাই মিলে প্রমাণ করি,মানুষ মানুষের জন্য।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :