এই বালক জাতীয় স্তরের টেবিল টেনিস খেলোয়াড়, অর্থ কষ্টে ওর মা সোনার কানের দুলটাই বিক্রি করে দিয়েছে!!

বাপি ঘোষ ঃ শিলিগুড়ি ডাবগ্রাম উদয়ন কলোনি নিবাসী প্রতিভাবান বালক অভিষেক বর্মন কথা বলতে পারেনা। ও কানেও শোনে না। ওর ভাষা একটিই, তাহলো টেবিল টেনিস। ব্যাট বলে কথা বলে অভিষেক। বয়স মাত্র ১৬ বছর।ও পড়ে সপ্তম শ্রেণীতে। আর টেবিল টেনিসের এতই নেশা যে কেরালা এবং মধ্যপ্রদেশে অনুষ্ঠিত মূক বধিরদের জাতীয় টেবিল টেনিসে অংশ নিয়ে ও পদক জিতেছে। বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছে কিন্তু আর্থিক সংকট ওকে সবসময় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। কিছুদিন আগে বেঙ্গালুরুতে খেলতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটতে না পেরে ওর মা সুমিত্রা বর্মন নিজের সোনার কানের দুল দুটি বিক্রি করে দেন। আবার ওর বাবা অধীর বর্মন না খেয়ে দেয়ে সারাদিন রাত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। দিনরাত গাড়ি চালানোর উদ্দেশ্য একটিই, ছেলে যাতে টেবিল টেনিসে আরো সুনাম অর্জন করে এবং ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে সেভাবে কেউ উৎসাহ দেয় না অভিষেককে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়াতে অনেকেই ওকে অবজ্ঞা করে। অথচ ওর মধ্যে রয়েছে প্রতিভা। বিখ্যাত টেবিল টেনিস প্রশিক্ষক ভারতী ঘোষ অবশ্য সব সময় উৎসাহ দিয়ে চলেছেন অভিষেককে। অভিষেকের বাবা এবং মা বলেন, আর্থিক সংকট থাকায় ছেলেকে একটি ভালো ব্যাট বা জার্সি কিংবা জুতো কিনে দিতে পারেন না। ফলে অনেক সময় পিছিয়ে পড়তে হয়। অথচ শিলিগুড়ি তথা বাংলার সুনাম বৃদ্ধি করছে অভিষেক। কেরালা এবং মধ্যপ্রদেশে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি টেবিল টেনিস টুর্নামেন্টে সাফল্য অর্জন করে পদক জিতে এসেছে অভিষেক। সবাই মিলে ওকে উৎসাহ দিলে আগামী দিনে ও বাংলার সুনাম আরো বাড়িয়ে তুলতে পারবে বলে ওর বাবা-মা জানিয়েছেন। রবিবারই অভিষেকের জন্মদিন ছিল। প্রশিক্ষক ভারতী ঘোষ এবং শিক্ষক সুভাষ অধিকারী অভিষেককে আশীর্বাদ এবং উৎসাহ দিয়েছেন। আগামী ৩রা ডিসেম্বর বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস। তার আগে বিভিন্ন সহৃদয় মানুষ, সরকার এবং ক্রীড়া প্রেমীরা এই ধরনের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের অবহেলা না করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলে অভিষেকের মতো আরো অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের মনে প্রদীপ জ্বলবে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন—