প্রণমি শিক্ষক দিবস
কলমে – মৌসুমী দে
ব্যারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
গৃহ বধূ
বয়স – ৫২
শিক্ষার কোনো শেষ আছে কি না জানি না
তবে এইটুকু জানি শিক্ষার সব পাঠ এক জন্মের নয়।
বন্য জীবন থেকে মানুষ যে শিক্ষা নিয়েছে তাতে এই পৃথিবীকে উন্নত ও শিক্ষিত হতে সাহায্য করেছে।
প্রকৃতি মানুষের জীবনের প্রথম শিক্ষক ।
প্রকৃতি শিখিয়েছে কতটা লড়াই করতে হবে , কি ভাবে লড়াই করতে হবে।
প্রতিপক্ষকে বোঝার শিক্ষা প্রতিনিয়ত মানুষকে অমানুষ থেকে মানুষ করেছে।
প্রকৃতিকে ব্যবহার কিভাবে করলে মানুষ নিজেকে উন্নত করতে পারবে , সমৃদ্ধ করতে পারবে তার রসদ যুগিয়ে মানুষের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটিয়েছে।
তথাকথিত অসভ্য মানুষ নিজেকে সভ্য তকমা দিয়েছে।
বিজ্ঞান মনস্ক মানুষের শিক্ষা সভ্যতার অগ্রগতি ঘটিয়েছে।
মানুষ পরবর্তীতে এই শিক্ষাকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে মানুষকে আরো বেশি সংঘবদ্ধ, সুশৃংখলা, ও নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে দিয়ে সমাজের বিন্যাস ঘটিয়েছে।
আর যারা এই গুরুত্বপূর্ন কর্ম কান্ডের সাক্ষী হয়ে নিজেদের অবস্থান শ্রেষ্ঠ আসনে উন্নীত করেছেন তারাই হলেন শিক্ষক ।
শৈশব থেকে শুরু করে একজন শিক্ষক পিতা মাতার পরেই নিজের দায়িত্ব পালন করেন মানুষকে মানুষে পরিণত করতে।
এই কঠিন কঠোর দায়িত্ব কর্তব্য পালনে সামান্য ভুল হলেই জীবনের সুতোটা ছিঁড়ে অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে সেই শিক্ষা সভ্যতার ইতিহাসে কেমন যেনো গ্রহণের ছায়া পড়েছে।
স্বার্থপরতা ভয় অসম্মান যদি সমাজের মেরুদণ্ডের উপর বেত্রাঘাত না করতো তবে দিন দিন রাগিংয়ের মতো ঘটনা সর্বত্র প্রাধান্য পেতো না।
মিত্যাচারিতা কপটতা প্রতারণা ছাপিয়ে গেছে মায়া মমতা ভালোবাসা আবেগ থেকে।
শিক্ষকদের শাসনের অধিকার আর স্নেহ ফিরে না আসলে প্রকৃতি কাউকে ছেড়ে দেবে না।
অশিক্ষা কুশিক্ষা অনাচার শিক্ষকতার ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছে।
সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণান , সবিত্রিবাই ফুলে, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্যার আবদুল কালাম আজাদ, মাদার টেরেসা , রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব, স্বামী বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর , এবং আরো অনেকের আদর্শ সমাজের যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করে প্রগতিশীল সমাজের মানুষ হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন।
আজকে তারাও লজ্জিত তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
প্রনম্য সকল শিক্ষক যারা শিক্ষার্থীদের মেরুদন্ড কে সোজা করতে শেখান তাদের আরো অনেক বেশি ধর্য্যশীল, ন্যায়পরায়ন ও সংবেদনশীল হয়ে জাতি ভেদাভেদহীন ছাত্র সমাজ গড়ে তুলে ভবিষ্যত প্রজন্মকে আলোকিত করেন ।
শিক্ষকদের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে পারে আগামীকে।
নয়তো কথায় আছে ” Revenge of nature” , প্রকৃতি কাউকে ছেড়ে দেবে না।
মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিশু থেকে সেই বৃদ্ধ শিশুতেই যেমন ফিরে এসে মৃত্যু বরণ করে নানান ওঠা পড়ার মধ্যে দিয়ে তেমন সঠিক শিক্ষা দিতে প্রকৃতিও সেই বন্য জীবন ফিরিয়ে দিতে সময় নেবে শুধু কয়েক বছরের।
তাই প্রকৃতি ও প্রকৃত শিক্ষক আমাদের ছাত্র জীবনের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর।
প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানাই সকল প্রকৃত শিক্ষকদের প্রতি, মাথা নত করি তাদের চরণে।