স্বনির্ভরতায় এক অন্যরকম লড়াইয়ের কাহিনী এই মহিলার

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ কলকাতার সেরা ডিজাইনার পোশাক ও গয়নার সম্ভার নিয়ে শিলিগুড়িতে আবারও উপস্থিত বিচিত্রা গাঙ্গুলি। ১৪ আগস্ট শিলিগুড়ি বাবুপাড়ার শক্তি সোপান ক্লাবে সেই প্রদর্শনী তথা বিক্রয় মেলার উদ্বোধন। স্বনির্ভরতার জন্য বিচিত্রা নিজে যেমন লড়াই চালাচ্ছেন তেমনই অন্যদের স্বনির্ভরতার জন্যও তিনি প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এক ব্যতিক্রমী উদাহরণতো বটেই।
আলিপুরদুয়ারের মেয়ে বিচিত্রা গাঙ্গুলি , সঙ্গীতে শিক্ষা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিয়ের পর কলকাতাতেই পাকাপাকিভাবে থাকা শুরু, কিন্তু অচিরেই ট্র্যাজেডি নেমে আসে জীবনে। অকালে স্বামী হারিয়ে জীবিকার কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হন তিনি । এরপর ভরসাস্থল ছিলেন যারা সেই বাবা-মাও চলে গেলেন অতি সামান্য সময়ের ব্যবধানে, ফলে লড়াই আরো কঠিন হয়। পরিস্থিতির চাপে সঙ্গীত জগত থেকে ছিটকে যেতে হলেও শিল্পমনস্ক পরিবেশে শিক্ষালাভের সুফল খানিকটা মেলে এইসময়। সখ্যতা হয়েছিল সঙ্গীতশিল্পী ও পোশাক ডিজাইনার দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে, তাঁর উৎসাহে ও সহায়তায় শুরু হয় বুটিক পোশাক ও গয়নার ছোট্ট উদ্যোগ।
কলকাতা তো বটেই, শিলিগুড়িতেও একের পর এক প্রদর্শনীতে ভালো সাড়া মিলেছে। এরপর তার সঙ্গে যোগ দেয় আরো কয়েকটি মেয়ে, যারা হাতের কাজ জানে ভালো, যারা একইরকমভাবে জীবিকা নির্বাহের জন্য লড়াই চালাচ্ছে্ন। বিচিত্রা বলেন, আসলে লক্ষ্য হলো, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মহিলা শিল্পীরা যারা হাতের কাজ করে সংসার প্রতিপালনের চেষ্টা করছেন তাঁদের শিল্পকর্মকে যত বেশি সম্ভব এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা। উত্তরবঙ্গের এবং উত্তরপূর্বের প্রান্তিক মেয়েদের পোশাক ও শিল্পকর্ম যাতে কলকাতার বাজারে আদৃত হয় সেই প্রচেষ্টাও রয়েছে।
আপাতত যাদবপুর সুলেখায় একটি ছোট ওয়ার্কশপ থেকে কাজ চলছে। মহিলা হলেও বিচিত্রাকে পোশাক তৈরির পণ্যের জন্য আসাম, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা এবং বাংলার নানা প্রান্তে যাতায়াত করতে হয় একা একাই। একের সঙ্গে অন্যের মেলবন্ধন ঘটিয়ে সাবেকি পোশাকে অভিনবত্ব আনা এবং তার দাম সাধ্যের মধ্যে রেখে রুচিশীল ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর মূল উদ্দেশ্য।