নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ কঠিন নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে প্রতিবছর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যে বস্ত্র দান করেন।এর সঙ্গে দান করা হয় অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রীও। কঠিন নিয়মের মধ্যে দিয়ে পোশাক তৈরি করে তা দান করা হয় বলে অনুষ্ঠানের নাম কঠিন চীবরদান। রবিবার শিলিগুড়ি হায়দারপাড়ার জ্ঞানজ্যোতি বিদর্শন ধ্যান আশ্রমে এই কঠিন চীবরদান উৎসব ঘিরে বোদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বেশ উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। এউপলক্ষে জ্ঞান জ্যোতি বিদর্শন ধ্যান আশ্রমে সকাল থেকে সারাদিন ধরে নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। পবিত্র ত্রিপিটক পাঠ থেকে শুরু করে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা, ভান্তেদের আহার প্রধান, চীবর পরিক্রমা, বুদ্ধ কীর্তন, অতিথি আপ্যায়ন, ধর্ম সভা ও কঠিন চীবর দান, ধুপ দীপ পূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাউল গান, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন— এইসব মিলিয়ে সেই অনুষ্ঠান এক সার্বজনীন রূপ নেয়। শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাই নন অন্যান্য মানুষও সেই অনুষ্ঠানে সামিল হন। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের বস্ত্র সংগ্রহ করেন। ভিক্ষুরা তাদের পরিধেয় বস্ত্র বাজার থেকে কিনতে পারেন না, বাজার থেকে পোশাক কেনার কোনও নিয়ম নেই। তাই বছরের এই বিশেষ সময়ে কঠিন চীবর দানের মাধ্যমে পোশাক দান করা হয়। এই চীবর দান বৌদ্ধ ধর্মের একটি ধর্মীয় আচার বা অনুষ্ঠান। এই ত্রিচীবর দানের পোশাক তৈরির সময় গাছের শিকড়, গুড়ি, ছাল, শুকনো পাতা, ফলের রং ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। কঠিন নিয়ম মেনে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সেই বস্ত্র তৈরি করে তা দান করতে হয়। কঠিন নিয়মের মধ্যে সেই বস্ত্র তৈরি এবং তা দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন ত্রিচবর দান।একবার ভগবান গৌতম বুদ্ধের জন্য বিশাখা এই চীবর তৈরি করেন। তারপর থেকে এই চীবরদানের অনুষ্ঠান চলে আসছে। শিলিগুড়ি হায়দার পাড়া জ্ঞান জ্যোতি বিদর্শন ধ্যান আশ্রমের সম্পাদক তপন কুমার বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই কঠিন চীবর দান মহোৎসবের মাধ্যমে তারা সমাজে শান্তির বার্তাও দিতে চান। এদিন জ্ঞানজ্যোতি বিদর্শন ধ্যান আশ্রম চত্বরে শিল্পী রাজু বড়ুয়ার নেতৃত্বে অনেকেই বুদ্ধ কীর্তনে অংশ নেন। বহু মানুষকে প্রদীপ প্রজননে অংশ নিতে দেখা যায় আশ্রম চত্বরে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন —