উৎসবে আমরা সবাই আনন্দ করেছি কিন্তু ইসকনের এই সাধুরা ঝুলন্ত ব্রীজ টপকে সিকিমের দুর্গত মানুষদের খাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ বহু মানুষ উৎসবের আনন্দে গত কদিন ডুবে থাকলেও শিলিগুড়ি
ইসকন কিন্তু সম্মিলিতভাবে সিকিমের আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে উৎসবের দিনগুলোয়।
গত ৪ঠা অক্টোবর উত্তর সিকিমে একটি হিমবাহ হ্রদ বিস্ফোরণের ফলে বিধ্বংসী বন্যা হয়, যার দরুন তিস্তা নদীর জলস্তর প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং তিস্তা নদীর সংলগ্ন বহু জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই অত্যন্ত বেদনাদায়ক পরিস্থিতিতে ইসকন পরিচালন মণ্ডলীর সদস্য শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ ও শ্রীমৎ ভক্তি পুরুষোত্তম স্বামী মহারাজের নির্দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সেবা করার জন্য ইসকন গ্যাংটক মন্দিরের ম্যানেজার “মাধব কান্ত দাস”-এর নেতৃত্বে সিকিমের স্থানীয় ১৫ জন যুবক-যুবতী ভক্তকে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। সিকিমের অন্তর্গত বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের ইসকন গ্যাংটক মন্দির থেকে খাবার রান্না করে প্রতিদিন চার–পাঁচশো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পরিবেশন করা হচ্ছে। বিশেষ করে সিংথাম এবং রংপু এলাকায় ক্যাম্প ইনচার্জ এবং ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর রান্না করা খাবার এবং অন্যান্য উপকরণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে বলে ইসকনের উত্তর পূর্ব ভারতের জনসংযোগ আধিকারিক নামকৃষ্ণ দাস জানিয়েছেন। নামকৃষ্ণ দাস আরও জানিয়েছেন,
যে সব জায়গায় রান্না করা খাবার পৌঁছনো সম্ভবপর ছিল না, সেইসব জায়গাতেও ইসকনের প্রতিনিধিরা যাবতীয় প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন চাল, ডাল, তেল, লবণ, হলুদ, সোয়াবিন, আটা, ছোলা, ছাতু থেকে শুরু করে অন্য রান্নার সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রদান করে চলেছে ।এছাড়া জীবন যাপনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন জামা-প্যান্ট ও শাড়ি সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বস্ত্র, শীতের বস্ত্র, কম্বল, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ইলেকট্রাল পাওডার, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত উপকরণ, শিশুদের উপযুক্ত খাদ্য, ফলমূল এবং বাসস্থানের জন্য ত্রিপলও প্রদান করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে।
ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক নামকৃষ্ণ দাস আরও জানিয়েছেন, আকস্মিক বন্যার কারণে উত্তর সিকিমের কিছু অংশ রাজ্যের অন্যান্য অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এই সমস্ত অসুবিধা সত্ত্বেও ইসকন প্রতিনিধিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুলন্ত ব্রিজের ওপর দিয়ে তাদের কাঁধে ভারী জিনিস নিয়ে উত্তর সিকিমের চুংথাংয়ে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। ইসকনের প্রতিনিধি দল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রিচু নামক গ্রামেও ওইসব ত্রাণ সামগ্রী প্রতি ঘরে ঘরে সরবরাহ করেছে। নামকৃষ্ণ দাস নিজেও সমস্ত বাধা অতিক্রম করে দুর্গাপুজোতে উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার নাগা গ্রামের অন্তর্গত শতাধিক মানুষদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
এছাড়াও শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুধু করেননি, সাথে সাথে এই দুর্ঘটনায় নিহতদের বিদেহী আত্মার সদ্গতির জন্য ঈশ্বরের নিকট ঐকান্তিক প্রার্থনা করেছেন। আগামী দিনে সিকিম সরকারের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে এই ধরণের মহৎ সেবামূলক কর্ম ইসকন আরও বৃহৎ আকারে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করছে বলে ইসকনের উত্তর পূর্ব ভারতের জনসংযোগ আধিকারিক নামকৃষ্ণ দাস জানিয়েছেন।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন—