নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ আজকাল অনেক ছেলেমেয়ে নিজের ক্যারিয়ারের নেশায় ভিন রাজ্যে বা বিদেশে চলে যাচ্ছে।তারপর আর বাবামায়ের খবর রাখছে না।তখন বাবামায়েরা হয় বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাচ্ছে নয়তো অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে গৃহবন্দি হয়ে থাকছে। এই অবক্ষয় সমাজের মধ্যেও ভালো খবর আছে। শিলিগুড়ি বাবুপাড়ার যুবক রাজ সিংহরায় বাবামায়ের কথা ভেবেই ভিন রাজ্যে আর নিজের অধ্যাপনার কাজে যোগ দিতে যায়নি। চার বছর আগে রাজের হাতে ছত্তিশগড়ের একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজে অধ্যাপনার জন্য নিয়োগপত্র চলে আসে। সেখানে কাজে যোগ দেওয়ার ভাবনা নিয়েও আর যায়নি কাজে।তার কথায়,অধ্যাপনার কাজে বাইরে যোগ দিলে বাবামাকে কে দেখবে? বাইরে থাকার নেশা পেয়ে বসলে বাবামার কস্ট হবে।তাই অধ্যাপনার কাজে যোগ না দিয়ে শিল্প কারখানায় থেকে স্বনির্ভর হওয়ার দিকেই বেশি করে নজর দেয় রাজ। তার বাবা জয়ন্ত সিংহরায় শিলিগুড়ি মহকুমার ফাসিদেওয়া লিউসিপাখরি হাতিরামজোতে বাজি কারখানা চালান। সেই কারখানাকে আরও সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হাল ধরেছেন রাজ। তার বক্তব্য, পড়াশোনা শেষ করে চাকরির অপেক্ষায় বসে থাকলে চলবে না। স্বনির্ভর হওয়ার জন্য শিল্প কারখানা স্থাপনে উদ্যোগী হওয়াই ভালো। রাজের এই ভাবনা ও কাজকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহল প্রশংসা করছে। রাজের মা ইলা সিংহরায় বলেন, ও যখন চাকরিতে যোগ দেবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলো। শুধু কেঁদেই যাচ্ছিলাম। শেষে ও আর কাজে যোগ না দিয়ে শিল্প কারখানা গড়ার পিছনে নেমে পড়ে। সে এক অন্যরকম গল্প।
এখন ওই বাজি কারখানাকে পুরোদমে এগিয়ে নিয়ে যেতে মাঠে নেমেছেন রাজের পাশাপাশি ওর বাবা-মা। আর সেখানকার আতসবাজির চাহিদাও বাড়ছে দিনকে দিন। এই দীপাবলির সময়তো সেখানে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। নতুন নতুন বাজির ধরন আনতেও রাজের পরিশ্রমের শেষ নেই। পরিবেশের কথা ভেবেও তারা কাজ করছেন। উত্তরবঙ্গের একমাত্র এই বাজি কারখানাকে তারা আরও ছড়িয়ে দিতে চান।