চা বাগান বন্ধ, বিনোদ-খুশিরা সব যক্ষ্মায় আক্রান্ত, পুষ্টিকর খাদ্য বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদন :চা বাগান বন্ধ ছয় মাস ধরে। কোনও পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দুবেলা সামান্য পেট পুরে খাওয়াও কষ্টকর বিনোদ ওঁরাওয়ের। চা শ্রমিক বিনোদ ওঁরাও অপুষ্টির জেরে যক্ষা রোগে আক্রান্ত। ওদিকে বাগান বন্ধ। তার মা ও স্ত্রী ঘরে রয়েছে। পরিশ্রম করে অন্যভাবে কোনও অর্থ রোজগার করবেন তারও উপায় নেই। কারণ যক্ষ্মা রোগ শরীরে বাঁসা বেধেছে। এই রোগের জন্য ওষুধ খেতে শুরু করেছে বিনোদ কিন্তু ওষুধ খেলে তো হবে না। সঙ্গে পুষ্টিকর খাবারও চাই। কিন্তু পুষ্টিকর খাবার সে কোথায় পাবে? আবার সেই বন্ধ বাগানের তরুণী খুশি ছেত্রী মাধ্যমিক পাশ করে বসে আছে। পড়াশোনা নেই। মনেও তার খুশি নেই।কারণ চা বাগান বন্ধ ছয় মাস ধরে। তার দিদির কাজ নেই। সংসার চলবে কি করে? খুশির মনে আরো অখুশি এই কারণে যে যক্ষ্মা রোগ শরীরে বাসা বেঁধেছে।। যক্ষ্মা রোগের জন্য ওষুধ খেতে শুরু হলেও পুষ্টিকর খাবার কে দেবে? এক মর্মান্তিক পরিস্থিতি ডুয়ার্সের বানারহাট এর দেবপাড়া চা বাগানের। দেবপাড়া চা বাগান বন্ধ থাকলেও তার পাশে চুনাভাটি এবং নিউ ডুয়ার্স চা বাগান আবার রুগ্ন। সেখানকার অনগ্রসর হতদরিদ্র বহু চা শ্রমিক এখন যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত। যক্ষ্মা রোগের ওষুধ খেলেও পুষ্টিকর খাদ্য যোগার করার সামর্থ্য তাদের নেই। এই পরিস্থিতিতে রবিবার ২৫ শে ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়ির ভক্তিনগর শ্রদ্ধা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বিশিষ্ট সমাজসেবী পূজা মোক্তার পুষ্টিকর বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী যেমন ডিম, সয়াবিন, বিভিন্ন ফল, ছোলা, হরলিক্স ইত্যাদি নিয়ে উপস্থিত হন লক্ষীপাড়া চা বাগানে। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট সমাজসেবী সোনালী সামন্তের আবেদনে সাড়া দিয়ে পূজা মোক্তার লক্ষ্মী পাড়া চা বাগানে উপস্থিত হলে সেখানে ওই বন্ধ দেবপাড়া চা বাগান এবং রুগ্ন চা বাগানগুলি থেকেও যক্ষা আক্রান্ত শ্রমিকরা উপস্থিত হয়। সোনালী সামন্তের পরিচালনায় সেখানে মানবিক অনুষ্ঠান হলে তাতে পূজা মোক্তার যক্ষ্মা আক্রান্ত বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক থেকে শুরু করে অন্য যক্ষ্মা আক্রান্ত হতদরিদ্র চা শ্রমিকদের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়ে মানবিকতার নজির তৈরি করেন। পূজা মোক্তারকে এই মানবিক কাজে সহযোগিতা করেন মা সুধাংশু বালা সারস্বত মহিলা সংঘের সমাজসেবী কবিতা বণিক, মাটিগাড়া তুম্বাজোতের মহম্মদ সমীর,পরিত্রাণ সহভাগিতার শিক্ষিকা পৃথা সেন, সমাজসেবী এবং শিলিগুড়ি চয়নপাড়া নিবাসী টোটোন সাহা। টোটোন সাহা তার সদ্য প্রয়াত মা রিতারানি সাহার স্মৃতির উদ্দেশ্যে কিছু খাদ্য সামগ্রী পূজাদেবীর হাতে তুলে দেন। সহযোগিতা করেন মানিক সরকারও। পূজাদেবী সেইসব বিতরণ করেন অসহায় হতদরিদ্র যক্ষ্মা আক্রান্ত চা বাগানের শ্রমিকদের হাতে।সেই সঙ্গে লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে কিছু নতুন শাড়ি এবং পুরনো কিছু বস্ত্র চা শ্রমিকদের মধ্যে বিলি করেন। পূজা মোক্তার এর এই মানবিক কাজের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত নার্স সোনালী সামন্ত। সোনালীদেবী জানিয়েছেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি প্রকল্প রয়েছে। সেই প্রকল্পের নাম নিশ্চয় মিত্র প্রকল্প। সেই প্রকল্প অনুযায়ী কেউ যদি টানা ছয় মাস ধরে যক্ষ্মা আক্রান্তদের পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে থাকেন তবে তাকে প্রকল্প অনুযায়ী রাজ্য সরকারের তরফে শংসাপত্র প্রদান করা হবে। পূজা মোক্তার যদি টানা ছয় মাস ধরে এই কর্মসূচি চালিয়ে যান তবে তাকেও শংসাপত্র প্রদান করা হবে এবং পূজা দেবীর মানবিক কাজের জন্য আগামী দিনে তারা পূজা দেবীকে সংবর্ধনা প্রদান করতে চান বলে সোনালী সামন্ত জানিয়েছেন। এদিন পূজাদেবীর কাছ থেকে পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী পেয়ে যক্ষ্মা আক্রান্ত চা শ্রমিকরা বেশ খুশি। তবে বন্ধ সেই চা বাগানের পরিস্থিতি খুব খারাপ। বহু চা শ্রমিক এখন সেখানে অপুষ্টির জেরে টিবি বা যক্ষ্মায় আক্রান্ত। যক্ষ্মার ওষুধের সঙ্গে পুষ্টিকর খাদ্য না পেলে তাঁদের জীবন সংশয় দেখা দেবে।ফলে উদ্বেগ বাড়ছে সেই সব চা বাগানে। পূজা মোক্তারকে এই ধরনের মানবিক কাজের জন্য সহযোগিতার গুগল পে নম্বর বা যোগাযোগ নম্বর
8918354785

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন: