চিনের বাতিকে ছাপিয়ে জনপ্রিয় পূর্ত দপ্তরের বিদ্যুৎ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর তৈরি এলইডি বাল্ব

নিজস্ব সংবাদদাতা,জলপাইগুড়িঃ প্রধানমন্ত্রীর ভোকাল ফর লোকাল স্লোগানকে একেবারে বাস্তবের রুপ দিচ্ছেন পূর্তদপ্তরের বিদ্যুৎ বিভাগের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।ইচ্ছে থাকলেই যে উপায় হয়, সেই প্রবাদ বাক্যকেও সত্যি করে দেখাচ্ছেন জলপাইগুড়ি অরবিন্দ নগরের বাসিন্দা ষাটোর্ধে জীবন সাহা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির “ভোকাল ফর লোকাল”-এর ডাকে অনুপ্রাণিত হয়ে অবসর জীবনে নিজের বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন এলইডি বাল্বের কারখানা। আর সেই কারখানা থেকে তৈরি এলইডি বাল্ব এখন জলপাইগুড়ি ছাড়িয়ে আলো ছড়াচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে।

১৯৮৮ সালে পূর্ত দপ্তরের বিদ্যুৎ বিভাগে কর্ম জীবন শুরু করেন জীবনবাবু। তার প্রথম কর্মস্থল ছিলো অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার আলিপুরদুয়ার। এরপর বদলি হয়ে জলপাইগুড়ি সদরে আসেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি হওয়ায় জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিদ্যুৎ বিভাগে তার পোস্টিং হয়। ২০১৭ সালে হেড ইলেক্ট্রিশিয়ান পদ থেকে অবসর গ্রহন করেন জীবনবাবু।

অবসর গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন বৈদ্যুতিন বাতি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতেন নিজের মত করে।এরই মধ্যে শুরু হয় লকডাউন। সেই সঙ্গে শুরু হয় ভারতের চিন বিরোধিতা।এরপর আত্মনির্ভর ভারত তৈরিতে “ভোকাল ফর লোকাল”-এর ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী।আর প্রধানমন্ত্রীর “ভোকাল ফর লোকাল”-এর স্লোগানে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন এল ই ডি বাল্বের কারখানা।

চিনের কোন সামগ্রী নয়, বরং কলকাতা থেকে দেশীয় সমস্ত সামগ্রী নিয়ে এসে তৈরি করছেন এল ই ডি বাল্ব।প্রথম প্রথম চেনা পরিচিতদের কাছে বলে কয়ে তার তৈরি সামগ্রী বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু জীবনবাবুর তৈরি বাল্বের ঔজ্জ্বল্য এবং দাম অচিরেই তার প্রচার এবং প্রসার বৃদ্ধি করেছে। খুব অল্প সময়ে গুণমানের বিচারে একটা জায়গা করে নিয়েছে পূর্ত দপ্তরের বিদ্যুৎ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর তৈরি এই বাল্ব।চাহিদা বাড়তে থাকায় এখন প্রোডাকশন ইউনিটে তার কাজে সাহায্যের জন্য একজন সহযোগীকেও অ্যাপয়েন্ট করেছেন।

কিন্তু কিভাবে পৌঁছনো সম্ভব হল এই সাফল্যে। জীবনবাবুর কথায় “ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়”।প্রধানমন্ত্রীর ভোকাল ফর লোকালের স্লোগানে অনুপ্রাণিত হয়ে যে এল ই ডি বাল্ব তিনি তৈরি করছেন, তা চিনের তৈরি এল ই ডি বাল্বের থেকে ঔজ্জলতায় অনেক ভালো হওয়ায়, সহজেই মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি । সেই সঙ্গে তার তৈরি বাল্বের দামও অন্যান্য নামী কোম্পানির প্রোডাক্টের থেকে অনেকটাই কম। সেই সঙ্গে ১ বছরের ওয়ারেন্টি। এই সব মিলেই তার তৈরি লোকাল প্রোডাক্ট এখন জলপাইগুড়ি ছাড়িয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পরছে বলে জানিয়েছেন পূর্ত দপ্তরের বিদ্যুৎ বিভাগের এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।

শুধু নিজে এল ই ডি বাল্ব তৈরি করেই ক্ষান্ত হতে চান না তিনি। তিনি চান চিনের তৈরি প্রোডাক্টকে ভারতের বাজার থেকে মুছে ফেলতে অন্যরাও তার মত এগিয়ে আসুক। আর এই কাজে উদ্যমীদের সমস্ত রকম সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, “ভোকাল ফর লোকাল” কে বাস্তবে রুপ দেওয়া জলপাইগুড়ির জীবন সাহা।