নিজের কাজের জেরেই ছাত্রছাত্রীদের কাছে ব্যতিক্রমী জানাস্যার

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ যোগাসনে তিনি বেশ কয়েকবার রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়ন একবার,রানার্স আপ দুবার। আবার জিমনাস্টিকসে ছবার তিনি জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এরোবিক জিমন্যাস্টিকসে রয়েছে তাঁর দুটি স্বর্ন পদক। এর বাইরে তিনি যে স্কুলে শরীর শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক সেই স্কুলের ছেলেমেয়েদের খেলাধূলাতে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে এগিয়ে দিতে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম এককথায় উচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে। করোনার আগে এবং করোনার সময়েও খেলাধুলার প্রসারে এক ব্যতিক্রমী নজির সৃষ্টি করেছেন শিলিগুড়ি বানীমন্দির রেলওয়ে হাইস্কুলের শরীর শিক্ষার শিক্ষক সুদীপ্ত কুমার জানা।
স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই জানাস্যার।শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ছেলেমেয়েরা যাতে শরীর চর্চা বা খেলাধূলায় অংশ নিতে পারে তারজন্য তিনি নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ি থেকে ডেকে ডেকে তিনি ছাত্রছাত্রীদের শরীর শিক্ষার ক্লাস করান। আর সেজন্য তিনি জানাস্যার হিসাবে বেশ জনপ্রিয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে।এই করোনার সময় তিনি নিয়মিত শরীর শিক্ষার ক্লাস নিচ্ছেন অনলাইনে। নিজের মাথা থেকে বেরও করেছেন কয়েকটি নতুন ব্যায়াম বা আসন।সেসব ব্যায়াম বা আসনের অনুশীলন ফুসফুসের শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করছে বলে তিনি জানান। তাঁরই পরিচালনায় সারা ভারত রেলওয়ে স্কুল ফুটবলে বানীমন্দির রেলওয়ে হাইস্কুল চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রাজ্য উর্জা কাপে মোহামেডান স্পোর্টিংকে হারিয়ে এই স্কুল তৃতীয় স্থান দখল করে। জাতীয় স্তরের সুব্রত কাপে এই স্কুল চার বার প্রতিনিধিত্ব করেছে এরমধ্যে একবারে গ্রুপ রানার্স হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে এই স্কুলেরই রাহুল বসুমাতা দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে গোথিয়া কাপে।স্যুইজারল্যান্ডেও যায় রাহুল।এই স্কুলেরই ছাত্র ফারমান আনসারি অনুর্ধ ১৪ ফুটবলে জিনসেন কাপে চিনে খেলতে যায় ভারতের হয়ে, ২০১৮ সালে।আবার দেশের হয়ে ইতালিতেও খেলতে যায় এই স্কুলেরই ছাত্র। এভাবে ফুটবল, এথলেটিক্স সবেতেই এই স্কুলের ছেলেমেয়েদের জাতীয় স্তরে অংশ নেওয়ার সুনাম রয়েছে বিগত কয়েকবছরে।আর সেইসব ছাত্রছাত্রীকে পিছন থেকে সবসময় গুরু বা শিক্ষক হিসাবে তিনি নানা পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এই করোনার মধ্যেও তিনি কিছু ছাত্রছাত্রীকে ডেকে স্কুলে যোগাসন ক্লাস করাচ্ছেন। স্কুল যে বন্ধ তা তাঁর মাথাতে প্রায়ই থাকছে না।ফলে স্কুলে নিজের চেম্বার খুলে রাখছেন প্রায়ই। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে কিভাবে নিজের পড়াশোনা এবং খেলাধুলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তার পরামর্শ তিনি সবসময় দিয়ে চলেছেন। আর সেই কারনে ছাত্রছাত্রীদের কাছেও তিনি হয়ে উঠেছেন ব্যতিক্রমী জানাস্যর।সামাজিক দায়বদ্ধতার অঙ্গ হিসাবে আর্থিকভাবে অনগ্রসরদের মধ্যেও তিনি নিজের বেতনের টাকা থেকে নানা খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীরা কেও ভালো রেজাল্ট করলে তাদের বাড়ি পৌঁছে বই উপহার হিসাবে তুলে দিচ্ছেন।