নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ ফের মৃত্যু হল কোভিড পজিটিভ দুই ব্যক্তির। এই দুই জনই শিলিগুড়ি পুর সভা এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের চম্পাসারি সংলগ্ন জ্যোতিনগর এলাকার বাসিন্দা ৬৬ বছর বয়সী কার্তিক পালের মৃত্যু হয়েছে। তিনি শিলিগুড়ি সংলগ্ন কাওয়াখালির ডিসান হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল তাঁর স্যোয়বা টেস্ট রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসে। আজ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, আজ রাতে মৃত্যু হয়েছে শিলিগুড়ি পুর সভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা ৬৪ বছর বয়সী বিমল কুমার পালের। শারীরিক অসুস্থতা বোধ করার পর শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের কিয়স্কে স্যোয়বা দেন তিনি। এরপর ২০ জুন তাঁর স্যোয়বা রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসে। গতকাল থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। আজ রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে, কোভিড নেগেটিভ হয়ে শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতাল থেকে আজ ১৬ জন ছাড়া পেয়েছেন।এদিকে আজ সকালে ফের স্যোয়বা সংগ্রহ করা হয়েছে অশোক ভট্টাচার্য্যের। রাতে তাঁর রিপোর্ত এসে পৌঁছয়। তাঁর স্যোয়াব রিপোর্ট ফের কোভিড পজিটিভ এসেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে, শারীরিকভাবে অশোক ভট্টাচার্য্য আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
শিলিগুড়ি পুর সভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য্যের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও এখনও কাটেনি সঙ্কট। এমনটাই জানালেন অশোক ভট্টাচার্য্যের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকেরা। অশোক ভট্টাচার্য্যের চিকিৎসার দায়িত্বে অন্যান্যদের সঙ্গে রয়েছেন নেওটিয়া গেটওয়েল হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কল্যাণ লাহিড়ী এবং ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক অয়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
অশোকবাবুর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এই দুই চিকিৎসক জানিয়েছেন, সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার অনেকটাই ভালো রয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য্য। মঙ্গলবার জ্বর নেই অশোকবাবুর শরীরে, নেই ইউরিনজনিত কোন সমস্যাও। মোটামুটি স্বাভাবিকভাবেই খাওয়াদাওয়া করেছেন তিনি। গানও শুনেছেন মঙ্গলবার সকালে। বিআইপিআইপি তুলে নেওয়া হয়েছে অশোক ভট্টাচার্য্যের। তবে, অক্সিজেনের প্রেসার কিছুটা কমানো হলেও মঙ্গলবারও অশোকবাবুকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার ১০ লিটার প্রতি মিনিট হিসেবে অক্সিজেন প্রেসার দেওয়া হচ্ছে তাকে। তবে বর্তমানে অশোকবাবুর কোন শ্বাসকষ্ট নেই বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার ফের একবার তার স্যোয়াব সংগ্রহ করে কোভিড পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ভি আর ডি এল-এ পাঠানো হয়েছে।আর তার রিপোর্ট আসে পজিটিভ।
তবে এত কিছুর উন্নতির পরেও কেন এখনও সঙ্কট কাটেনি অশোকবাবুর? চিকিৎসকদের মতে এই ধরণের রোগীর কেস স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, অনেক সময় আক্রান্ত হওয়ার ৮ থেকে ১০ দিন পরেও রোগীর শারীরিক অবস্থার হঠাৎ করে অবনতি হয়। তাই আর দু-তিন দিন পরেই অশোকবাবু সম্পূর্ণ সংকট মুক্ত হয়েছেন কিনা তা বলা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। অশোকবাবুর ডায়াবেটিস এবং ব্লাড প্রেসার নর্মাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কোনরকম যাতে সমস্যা তৈরী না হয় সেইজন্য তাকে উপযুক্ত ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে, অশোক ভট্টাচার্য্যের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে কলকাতা ট্রপিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসক বিভূতি সাহা এবং কলকাতা আই ডি হাসপাতালের ইনফেকশাস ডিজিজ স্পেশালিস্ট চিকিৎসক যোগিরাজ রায়-এর সঙ্গেও প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নেওটিয়া গেটওয়েল হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কল্যাণ লাহিড়ী এবং ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক অয়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়।পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবও ওই নার্সিংহোমে ফোন করে অশোকবাবুর চিকিৎসার প্রতি যত্ন নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। অশোকবাবুর দ্রুত আরোগ্যকামনা করেছেন গৌতমবাবু।অপরদিকে শিলিগুড়িতে করোনা ভয়াবহ আকার নিতে থাকায় শিলিগুড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অনেকেই দশ দিনের জন ১০০% লকডাউন চাইছেন।