শিল্পী পালিতঃ শিলিগুড়ির সঙ্গীত শিল্পী ধ্রুব নন্দী এবারে তার কন্যাকে নিয়ে কিছু কথা জানালেন আত্মকথায়। তিনি তার কন্যাকে সঙ্গীত নিয়ে বিশ্ব ভারতীতে পড়াতে চান —
কত জন্মের পুণ্যের ফলে একজন কন্যা সন্তানের পিতা হওয়া যায়,আমার ঠিক জানা নেই, তবে এটুকু বলতে পারি – যেদিন আমার ঘর আলো করে সে এলো,আমি অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম।নিজের চোখকেও বিশ্বাস হচ্ছিল না,দেখে মনে হচ্ছিল যেন ঈশ্বর নিজের হাতে পরম যত্ন করে তৈরি এই উপহার আমার জন্য পাঠিয়েছেন।এ যে আমারি হৃদয়ের একটি খন্ড।আমি সত্যি ধন্য হলাম।এই তো আমার পরম আপনজন,আমার কন্যা,আমার সুকন্যা।
দেখতে দেখতে প্রায় আঠারোটা বছর কখন কাটিয়ে ফেলেছি বুঝতে পারিনি।প্রতি মূহুর্তে তার বেড়ে ওঠা,কচি দুটি হাতে আমায় ধরে বাইকে করে খুব ভোর বেলা স্কুলে যাওয়া,আধো আধো কথা,ফুটফুটে চাহনি,দৌড়ঝাপ,আবদার,অভিমান আর মন ভোলানো হাসি় ও হাতে হারমোনিয়ামের ঠিকমতো নাগাল না পাওয়া ছোট্ট কচি গলার গান…এসব কিছু পার হয়ে এসে এখন সে সাবালিকা হতে চলেছে।
এই মূহুর্তে সে ভীষণ ব্যাস্ত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে।যদিও মায়ের ওষুধ,দাদার কাজকর্ম এবং আমার শরীর স্বাস্থ্য সবকিছু ঠিকঠাক্ চলছে কিনা সেদিকে সদা জাগ্রত দৃষ্টি তার।সঙ্গে গানের রেয়াজটাও চলছে।
ভবিষ্যতে সঙ্গীত নিয়ে বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করার ও সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে সে।অনেকটাই পরিণত হয়েছে সে এখন।
তার স্নেহ মিশ্রিত শাসন,তার অকৃত্রিম ভালোবাসা,তার উপস্থিতি..আমাদের বাড়িটাকে যেন স্বর্গে পরিনত করেছে।
কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা–এই যে তিল তিল করে আমার নিজের কাছে প্রতি মূহুর্তে বেড়ে ওঠা মেয়েটা-তার আদর আহ্লাদ,স্নেহ- ভালোবাসা,মমতা,মান-অভিমান,ভালোলাগা,মন্দলাগা ইত্যাদি ছেড়ে প্রকৃতি তথা সময়ের অমোঘ নিয়মে বাবা,মা,দাদা ও তার এতদিনের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিজের বাড়িতে যেতে উদ্যত হবে..সেদিন আমি সেই শূন্যতার মাঝে কি ভাবে নিজেকে সামলে রাখব ???
–গর্বিত পিতা..ধ্রুব নন্দী