শিল্পী পালিতঃ আজ আমাদের আত্মকথা বিভাগে বাংলাদেশের সিলেটের সাহিত্য ও সংস্কৃতি কর্মী আনোয়ার হোসেন মিছবাহর কথা মেলে ধরছি —–
আমি সাহিত্য ও সংস্কৃতিকর্মী আনোয়ার হোসেন মিছবাহ্,
বাংলাদেশে আমার জন্ম। আমার বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার ইলাশকান্দি এলাকায়। বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া ও মা নেহারা খাতুন আসিয়ার এক মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আমি ।সেই শৈশবকাল থেকে বাবার সংগৃহিত বই ঘাটতে ঘাটতেই আমার লেখালেখির জগতে আসা ।১৯৮৭ সাল থেকে রেলগাড়ি শিরোনামের কবিতা দিয়েই আমার লেখালেখি শুরু।আর প্রকাশের জগতে ১৯৮৯ সালে । স্থানীয় একটি দৈনিকে কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে আমি নিয়মিত হতে থাকি সাহিত্যজগতে।বর্তমানে সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় বিচরণ করে চলেছি।কবিতা দিয়ে আমার লেখনি যাত্রা শুরু হলেও কবিতা,গল্প,গান,উপন্যাস,প্রবন্ধ, নিবন্ধ লিখে চলেছি।স্থানীয় পত্র পত্রিকায় আমি কলাম লিখি। প্রায় নিয়মিতই কলাম লিখে চলেছি। শুধু তাই নয়,বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রেরও নিয়মিত কথক আমি ।সামাজিক,সাংস্কৃতিক ইত্যাদি বিষয় নিয়েই সাজানো থাকে আমার কথিকা পসরা।দীর্ঘদিন লেখালেখির জগতে বিচরন করলেও আমার নিজস্ব বই হয়ে ওঠে ঢিলেকাব্য নামক কবিতার বই।এবং এটিই আমার প্রথম কবিতার বই।বনসাই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের বাংলা একাডেমির বই মেলায়।এর পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে আবারও বাংলা একাডেমির বইমেলাকে ঘিরে প্রকাশিত হয় আরো দুটি বই।এর একটি একবাক্স দীর্ঘশ্বাস ও অপরটি ছেঁড়া পঙ্ ক্তি
।বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রচ্ছদ শিল্পী ও লেখক ধ্রুব এষ এঁর আঁকা প্রচ্ছদ ও বাসিয়া প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বই দুটিও কবিতার বই।বাংলা একাডেমির আগামি বইমেলায় নির্বাচিত প্রবন্ধ ও গানের বই আসার কথা রয়েছে ।উপন্যাস-দূর্ঘট সিঁড়ির প্রান্তে ও বাছাই করা লিমেরিক দিয়ে আরো দুটি বই করার পরিকল্পনা আছে আমার। আমি আনোয়ার হোসেন মিছবাহ্ জন্মগ্রহন করি ২২ সেপটেম্বর ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ,৫ আশ্বিন ১৩৭৭ বঙ্গাব্দ,২০ রজব ১৩৯০ হিজরির মঙ্গলবার সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে। আমার শৈশব কেটেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর ৬ নং ওয়ার্ডের ইলাশকান্দি এলাকার পৈত্রিক নিবাসকে ঘিরেই।পড়ার পাঠ চুকিয়ে সারাদিন হৈ চৈ,ডাঙ্গুলি,কাবাডি,ফুটবল,ক্রিকেট আর স্রোতস্মিনী ছড়ায় সাঁতার কেটে কেটে।বিকেল হলেই এলাকার ছেলে মেয়ে মিলে হৈচৈ আনন্দ করে দূরন্ত সময় কেটে যেতো আমার।
শৈশবকাল থেকে সামাজিক সংগঠন করে জীবনের অনেকটা সময় পার করেছি।লেখালেখি বা মঞ্চনাটক পেশা না হলেও নেশায়,অভিনয় করেছি।সমাজসেবার নেশা থেকে এলাকায় প্রতিষ্টিত এনজিও তে স্বেচ্ছাশ্রমে জীবনের অধিক সময় শ্রম দিয়েছি। সেলাই প্রশিক্ষণ এ্যামব্রয়ডারী প্রশিক্ষণ বাচ্চাদের প্রি প্রাইমারী এ্যাডুকেশন,পরিবেশ রক্ষায় আমার নেতৃত্ব ছিলো।বৃক্ষরোপন থেকে শুরু করে সামাজিক আন্দোলনে আমি হাসিমুখে যোগদান করি।
আমি লেখাপড়া করেছি আমার নিজের জেলার খাসদবীর প্রাইমারি স্কুল,দি এইডেড হাই স্কুল,মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,সিলেট ল কলেজ এবং এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে।ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছি বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই সিলেট শহরতলীর দক্ষিণসুরমা থানার ফুলদি গ্রামের জনাব,আব্দুল মুকিত আফরোজ ও মনোয়ারা বেগমের ৭ নম্বর সন্তান-লালাবাজার হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন নাজনীনের সাথে
বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই।আমাদের দুটি সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে জয়িতা হোমেয়ে জয়িতা হোসেন ইরা সিলেট সরকারি হাইস্কুলে ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়ছে এবং আড়াই বছর বয়েসি আয়ান হোসেন জয় ছুটোছুটিতে ব্যস্ত।আমি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা।১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে অদ্যাবধি ব্যাংকিং পেশায় কর্মরত আছি।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ সিলেট থেকে তরুণ লেখক পদকে ভুষিত হই। দীর্ঘদিন সাহিত্যের ছোটকাগজ কাশবন সম্পাদনা করেছি।সহযোগি সম্পাদক হিসেবে যুক্ত থেকেছি মণিপুরি সাহিত্য ম্যাগাজিন ইঙ্খোল,উৎসব মুখপত্র বাসন্তিকা,সাহিত্যের ছোটকাগজ শামুখ,ঝিনুক,সন্ধানী ও সিলেট কলেজ বার্ষিকী সৃজন এ। জাতীয় কবিতা পরিষদ ও জাতীয় কবি সংগঠন অনুপ্রাস,পয়েটস ক্লাব,সিলেট লেখক সমিতিতে দীর্ঘদিন যুক্ত থেকে সাহিত্য সাধনা করেছি। আমি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ সিলেট এর আজীবন সদস্য। আমি একসময় ফ্রী ল্যান্স সাংবাদিকতাও করেছি।
বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক মহিউদ্দিন শীরুর সিলেটের শতবর্ষের সাংবাদিকতা,প্রখ্যাত লেখকও গবেষক নন্দলাল শর্মার সিলেটের সাহিত্যঃস্রস্টা ও সৃষ্টি,প্রখ্যাত গবেষক শামসুল করিম কয়েস এর বাংলা সাহিত্যে সিলেট দ্বাদশ খন্ডতেও আমাকে খুঁজে পাওয়া যায়।
আলু,ডাল,বেগুন ভর্ত্তা ও মাংশ আমার প্রিয় খাবার।অবসর কাটে লেখালেখি,সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আড্ডা,সভা-সমাবেশ ও বইপত্র
পড়ে।লেখালেখি জীবনে এখনো তৃপ্তির ঢেকুর তুলিনি। আমার ধারনা এখনো আমি লেখক হয়ে উঠতে পারিনি।লেখালেখি ও সমাজসেবা নিয়ে যেতে চাই অনেক দূর।