নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ প্রতিদিন যে পেটে ভাত জুটবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আধ পেট খেয়েই হামেশা দিন পার করতে হয়।এরমধ্যেই ফুটবল মাঠে সে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিন্তু ভয় একটাই, অর্থ সঙ্কট।
জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগানের আদিবাসী মেয়ে কবিতা তির্কী। আর্থিকভাবে অনগ্রসরতা বা আধ পেট খাওয়া পেট হলে হবে কি,মাঠে যখন বল নিয়ে ও দৌড়য় তখন বিপক্ষের খেলোয়াড়েরা সব কাত। আজ এই ভিডিওতে দেখুন চা বাগানের আদিবাসী এই মেয়ের ফুটবল খেলার খবর।
চা বাগানে আধপেট খেয়ে থাকলে হবে কি, কবিতা তির্কী পাড়ি দিলো মহিলা ফুটবলের জাতীয় দলের ট্রায়ালে। “দিল্লীতে সেই ট্রায়াল হচ্ছে ।”
সবুজ বাগানের মধ্যেই কবিতাকে শৈশব থেকে তারা চা শ্রমিক বাবা উৎসাহ দিতেন ফুটবল খেলার জন্য।মেয়ে যাতে সবুজের মতোই তরতাজা ফুরফুরে থাকে তারজন্য ফুটবল খেলায় উৎসাহ দেন চা শ্রমিক বাবা। কিন্তু কখন যে কার জীবনের মোমবাতি নিভে যায় তা কেউ বলতে পারে। হঠাৎ কবিতাকে লড়াইয়ের ময়দানে রেখে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন ওর চা শ্রমিক বাবা। বাবার প্রেরনাতেই ফুটবলে শট নেওয়া শুরু কিন্তু হঠাৎ বাবা চলে যাওয়ায় মুষড়ে পড়ে কবিতা।কিন্তু তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে আবার ফুটবল নিয়ে সবুজ গালিচায় দৌড় আর দৌড়। এখনো চা বাগানের ফাঁকা জায়গায় প্রশিক্ষক অমিত স্যারের কাছে ফুটবলের তালিম নেওয়ার সময় কবিতার মনে পড়ে যায়, তারা বাবা সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে দেখছে মেয়ের ফুটবল খেলা।
জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ১০ নম্বর শ্রমিক লাইনের বাসিন।দা কবিতা তির্কী। এবার অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের কাছ থেকে তাঁর ডাক এসেছে । এর আগেও একবার অবশ্য এ আই এফ এফ ডেকেছিলো এই আদিবাসী খুদে ফুটবল খেলোয়াড়কে, অর্থের অভাবে সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।কিন্তু এবার তাঁর সুযোগ যাতে অর্থের অভাবে হারিয়ে না যায়,তারজন্য কিছু মানুষ এগিয়ে আসেন। কোচ অমিত রায় এবং ফুটবলে হাতেখড়ি দেওয়া নির্মলা কোচিং ক্যাম্পের সদস্যরা উদ্যোগী হয়ে জোগাড় করছে অর্থ। কোচ অমিত রায় বলেন, চা বাগানের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে অনগ্রসর একজন আদিবাসী মেয়ে ইন্ডিয়ান ফুটবলের প্রিমিয়ার লীগে খেলার জন্য ট্রায়াল ক্যাম্পে গেলো, এটাই সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। তবে যেহেতু মেয়েটি আর্থিক ভাবে খুবই দূর্বল সেই কারণে সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ রাখছেন অমিতবাবুরা।
বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য দৌড়ে চলেছে এই চা- কন্যা। প্রতিভা বোধহয় এমনই হয়।দুঃখ আঘাতের পরও সে ঘুরে ছাড়ানোর জন্য সবসময় লড়াই করতে চায়। ফুটবলার কবিতা তির্কীট বক্তব্য, বাবা আজ নেই, মা চা বাগানে কাজ করে যে হাজিরা পায় তাই দিয়েই কোনোমতে চলে আমাদের সংসার। অমিত স্যারের কাছে ফুটবল শিখছি এবার দিল্লী যাচ্ছি মহিলা ফুটবল দলের ট্রায়াল ক্যাম্পে। দেখা যাক কি হয়।
কবিতার এই লড়াইয়ে আরেক প্রেরনাদাত্রী ওর গর্ভধারিনী মা সিলবিনা ওরাও।চা বাগানে দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন সিলবিনা।অভাবের সংসার। তারপরও মেয়েকে ফুটবলার তৈরীর জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মা-ও।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন —