বাপী ঘোষ ,শিলিগুড়িঃ সে স্কুলের মূল মন্ত্রই হল শৃঙ্খলা ও নিষ্ঠা। তার সঙ্গে পরিশ্রমতো আছেই। আর তার জেরেই সে স্কুল ভারতের সেরা স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম। দার্জিলিং পাহাড়ের ঐতিহ্যমণ্ডিত বহু স্কুলের মধ্যে একটি হল নর্থ পয়েন্ট স্কুল। ১৮৮৮ সালে তৈরি হওয়া এই স্কুল আজও তার সুনাম ধরে রেখেছে।
ভোর থেকে বিকেল, এমনকি বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নিয়ম বেঁধে চলছে স্কুল। রবিবার স্কুল ছুটি। ছুটির দিন আছে অন্য অনেক সময়েও। কিন্তু ছুটি হলে হবে কি, স্কুলের যে সব ছেলে এর মধ্যেও পড়তে চায়, তাদের জন্য বিশেষ ক্লাস বসে স্কুলে। সেই অর্থে বলা যায় এই স্কুলে পড়ার জন্য কোন ছুটি নেই। ফাদার লরেন্সের কথায়, পড়াশুনায় আবার ছুটি কিসের? পড়ার কি শেষ আছে? এগিয়ে যেতে হবে আরও।
এই সময় দেশের অন্যতম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এটি। আর দেশের বোর্ডিং স্কুলগুলোর মধ্যে এর স্থান তৃতীয়। আই সি এস ই বোর্ডের রেজাল্টেও এই স্কুল নজর কাড়ে গোটা দেশেই। অথচ ২৫ জন ছাত্র নিয়ে এই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেই সময় সেখানে বোরডার ছিল মাত্র ১৮ জন। প্রথমে স্কুলটি ছিল দার্জিলিঙের সানি ব্যাঙ্কে। পরে স্থানান্তরিত হয় সিংমারিতে। শুরুতে স্কুল ভবন তৈরিতে ২০০০ লোক কাজে নামেন। আর টানা তিন বছর ধরে কাজ হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ফাদার হেনরি ডেফেলফিন।
শুরু থেকেই স্কুলে শৃঙ্খলাকে বেশি করা প্রাধান্য দেওয়া হয়। আজও তা চলছে। নেপালের প্রাক্তন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ, ভুটানের প্রাক্তন রাজা জিগমেসিংগে ওয়াংচুক , বিশ্ব বিলিয়ার্ড চ্যাম্পিয়ন মাইকেল ফোরিরা থেকে শুরু করে আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। এখন স্কুলে ১২০০ এর বেশি ছাত্র রয়েছে। আমেরিকা, চিন, জাপান, জার্মানি সহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্ররা এই স্কুলের সুন্দর পাহাড়ি পরিবেশে পড়তে আসছে। স্কুলে রয়েছে বিরাট এক রেফারেন্স লাইব্রেরি, সুন্দর স্যুইমিং পুল। পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলারও দারুন পরিবেশ রয়েছে সেখানে।