শিল্পী পালিতঃ ছোট থেকেই তার আগ্রহ সঙ্গীতের প্রতি। বড় হয়েও সে আগ্রহ ছাড়তে পারেননি। তার কথায়, সঙ্গীত বিশেষ করে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শরীর ও মন ভালো রাখে। এ সঙ্গীতের চর্চা মনে ধৈর্য্য তৈরি করে। একটা নিয়মে জীবনকে বেঁধে দেয়। তাই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের নেশায় ডুবে থাকছেন শিলিগুড়ি কলেজপাড়ার সঙ্গীত শিল্পী সোমা পাল।
ছোট থেকেই সোমাদেবীর মনে গান শোনার একটি কান তৈরি হয়েছিল। ছোট থেকেই তিনি শুনে শুনে আধো আধো গলায় গান গাইতেন। পরে এগার বছর বয়সে তার ছোট পিসির কাছে গান শেখার হাতে খড়ি।
সোমাদেবীর বাবা চাকরি করতেন বলে বিভিন্ন স্থানে বদলি হতেন। আর তার জেরে সোমাদেবীর শিক্ষা গুরুর বদল ঘটতে থাকে বারবার। তবে ১৯৯০ সালে তারা পাকাপাকিভাবে শিলিগুড়ি চলে আসেন। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি স্বর্গীয় উৎপল বসুর কাছে আগ্রা গোয়ালিয়র ঘরানায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিতে শুরু করেন। সাত বছর তার কাছে তালিম নেন। ১৯৯৮ সালে বিয়ে হওয়ার পর সাংসারিক চাপ বেড়ে যায়। এরফলে কিছুদিনের জন্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে সরে গিয়ে শ্রীমতি মালবিকা চক্রবর্তীর কাছে নজরুল গীতি,ভজন, আধুনিক শেখা শুরুন করেন।২০০৪ সালে তিনি চলে যান কলকাতায় জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কাছে গান শিখতে। সেখানে পাঁচ বছর আধুনিক গান শেখেন। ২০০৮ সালে কলকাতায় গুরুজি ওস্তাদ রাশীদ খানের কাছে রামপুর স্যাহেসোয়ান ঘরানায় তালিম শুরু। চার বছর ধরে সে তালিম নিতে নিতেই ২০১১ সালে বিদূষী শুভ্রা গুহের কাছেও একই সাথে আগ্রা ঘরানায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত,ঠুমরী, দাদরা,ভজনের তালিম নেন সোমাদেবী। আজও তালিম নিয়ে মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে ভালোবেসেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।
শিলিগুড়ি দীনবন্ধুমঞ্চ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। বিভিন্ন ক্লাব ছাড়াও শিলিগুড়ির বাইরে অনেক স্থানে অনুষ্ঠান করেছেন। নর্থবেঙ্গল ক্ল্যাসিক্যাল আর্টিস্ট ফোরামের সঙ্গেও তিনি যুক্ত। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত তার রক্তে। তিনি বলেন,একদিন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত রেওয়াজ না করলে মন খারাপ হয়ে যায়। আমার কাছে রেওয়াজই হল পুজো। এরমধ্যেই আমি ঈশ্বরকে অনুভব করি।
ভবিষ্যতে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আরও চর্চার পাশাপাশি ছোটদের মধ্যে এর চর্চা আরও ছড়িয়ে দিতে চান সোমাদেবী। গান ছাড়া তিনি বই পড়তে ভালোবাসেন। লেখালেখি করতেও তার ভালো লাগে। ভালোবাসেন ভ্রমন করতেও। তার বাইরে নতুন নতুন পদ রান্না করতেও তিনি ভালোবাসেন।