নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়ি ঃঃ স্কুল ছুট ছেলেমেয়েদের স্কুলে এনে রাজ্য স্তরের বীরাঙ্গনা পুরস্কার পাচ্ছে শিলিগুড়ির স্কুল ছাত্রী সীমা শা। আগামী কুড়ি তারিখে সীমাকে কলকাতায় পুরস্কৃত করবে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন।
সীমা শা-র বাবা নেই। অনেকদিন আগে মারা গিয়েছে। আর মা কোনওমতে কিছু কাজ করে সংসার চালায়। জংশনের কুলি পাড়ার বস্তিতে সীমার বাড়ি। ঘরে অভাব নিত্য সঙ্গী। এরমধ্যেও রাজেন্দ্র প্রসাদ গার্লস হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়ছে সীমা। সীমা শুধু নিজে লেখাপড়া করে না,ও চায় বস্তির সব ছেলেমেয়ে স্কুলে যাক। তাই বিগত সাত বছর ধরে বিভিন্ন বস্তির স্কুল ছুট দুশো ছেলেমেয়েকে ও বুঝিয়েসুঝিয়ে স্কুলে নিয়ে এসেছে। অনেক জায়গায় মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়ে বাবামা কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর সীমা সেসব জায়গায় গিয়েও বাল্য বিবাহ আটকে দিয়েছে। মূলত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিনির তত্বাবধানে সীমা এই কাজ করে নজির তৈরি করেছে।শিশু অধিকার সপ্তাহে রাজ্য জুড়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন জেলার ছেলেমেয়েদের পুরস্কৃত করছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। দার্জিলিং জেলা থেকে শিশু সুরক্ষা কমিটি সীমার নাম চূড়ান্ত করে কলকাতায় পাঠালে সেখানে তা চূড়ান্ত হয়। শিলিগুড়িতে রবিবার সিনির উদ্যোগে শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হলে তার পরিচালনাতেও ছিল সীমা। সিনির উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক শেখর সাহা জানিয়েছেন,তারা বিভিন্ন স্থানে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। বস্তি এলাকায় শিক্ষার অভাব এবং আর্থিক সমস্যার কারনে অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের স্কুলে না পাঠিয়ে কাজে পাঠায়। সেদিকে তারা নজর রেখে কাজ করছেন। সীমাদের মতো মেয়েরা তাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে প্রচার এবং স্কুল ছুটদের স্কুলে পাঠানোর মতো কাজে নেমেছে।