বাপি ঘোষ,শিলিগুড়িঃ আমরা সবাই রাজা রাজদেরই রাজত্বে।রাজাতো তার মামাও ছিলেন।বহুদিন রাজ্য শাসন করেছেন।আজ রাজা-মামা নেই। তবে ৭১ বছরে পৌছে রাজার ভাগ্নের পরিস্কার কথা,মামা-ভাগ্নে যেখানে ভয় নেই সেখানে,একসময় মামার সঙ্গে থেকে রাজ শাসন দেখেছি। তখন সে রাজনীতিও ছিল অন্যরকম।আজ রাজনীতি আর এক রকম। রাজনীতি তার একদম নাপসন্দ। গরিব মানুষের উন্নতির জন্য দিনরাত এক করে দেওয়ার রাজনীতি কোথায়? তাই রাজনীতি থেকে দশ হাত দূরে থেকেই বাকি সময়টা পার করে দিতে চান প্রয়াত সিকিম রাজ তাসি চোগিয়াল পালদেন থেনডুপ নামগয়ালের ভাগ্নে প্রিন্স জিগমে ওয়াংচুক।
সিকিমের গ্যাংটকেই বসবাস করেন প্রয়াত সিকিম রাজের ভাগ্নে।কদিন আগে দুর্ঘটনায় তার বাম পা ভেঙেছে। তারপর একপ্রকার ঘরে বসেই দিন কাটে।কেউ আর সেভাবে তাদের খবরও নেয় না।অথচ যখন তার মামা রাজা ছিলেন,সে কি সম্মান,সে কি আদর। মামার সঙ্গে কখনও শিকারে বের হওয়া,কখনও ঘোড়ায় চাপা,সে কি মজা। আজ শুধু শূন্যতা।
শুধু ভাগ্নেরই এ অবস্থা কেন,প্রয়াত সিকিম রাজের এক ছেলে চোগিয়াল ওয়াংচুক নামগয়াল বহু দিন ঘর ছাড়া।ঘুরে বেড়ান এক বৌদ্ধ মঠ থেকে আর এক বৌদ্ধ মঠে। খবর নেন না আত্মীয় পরিজনের,খোঁজেন শান্তি । ডুবে থাকেন মেডিটেশনে।আর এক ছেলে প্রিন্স পালদেন নামগয়াল পড়ে থাকেন আমেরিকাতেই। বাবার সেই রাজ্য থেকে অনেক দূরে,অন্য এক দেশে। আর মেয়ে অবশ্য সিকিমে থাকলেও কেউ আর তার খবরও নেয় না।রাজার ভাগ্নে জানালেন,শুধু তারাই কেন, সিকিমের আদি বাসিন্দাদের সংরক্ষণ সেভাবে কোথায়? তারা চাইছেন,ভুটিয়া,লেপচা,লিম্বুদের সর্বত্র সংরক্ষণের ব্যবস্থা হোক।কেননা,বাইরের বহু লোকের আগমনে পুরনোদের অস্তুিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে।এসব নিয়ে তার মনে দুঃখ থাকলেও সিকিমের পর্যটনে উন্নতি, জৈব কৃষির উন্নতি, ভেষজ ওষুধের কাজে উন্নতি তাকে আনন্দ দেয়। কদিন আগে পা ভেঙে যাওয়ায় চিকিৎসার জন্য তিনি এসেছেন শিলিগুড়ি । প্রসঙ্গত সিকিম কয়েকবছর আগেও রাজার শাসনে ছিল।১৯৭৫ সালে ভারতীয় সেনা সিকিমে রাজতন্ত্র শেষ করে। সে বছরই গণ ভোটের ফলে সিকিম ভারতের অঙ্গ রাজ্যে পরিণত হয়।তার শেষ রাজা ছিলেন চোগিয়াল পালদেন থনডুপ নামগয়াল।