নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ পড়াশোনা তেমন নেই শঙ্কর রায়ের। সামান্য মাধ্যমিক পাশ। পেশায় একজন গাড়ি চালক। কিন্তু তা হলে হবে কি, কাজে তো তিনি অসামান্য নজির তৈরি করছেন।কোথাও এক হাজার টাকার ট্রিপে ভাড়া গেলে, একশ টাকা জমিয়ে রাখেন,কোথাও দেড় হাজার টাকায় ভাড়া গেলে তা থেকে জমিয়ে রাখেন দেড়শ টাকা আবার যদি দুহাজার টাকায় ভাড়া যানতো দুশো টাকা জমিয়ে ফেলেন,বছর শেষে ১৭ মে বিবাহবার্ষিকী এলে স্ত্রী জুলি রায়কে সঙ্গে নিয়ে সেই সব জমানো টাকায় সমাজসেবার কাজে নেমে পড়েন তিনি। কোচবিহারের মদন মোহন কলোনির বাসিন্দা ৪২ বছর বয়স্ক শঙ্কর রায়ের এ যেন এক নেশা। পরিস্কার করেই তিনি বলেন, অন্যের জন্য, সমাজের জন্য কিছু কাজ করতে ভালো লাগে। আনন্দ হয় মনে। তাই এই প্রয়াস।
১৭ মে ২৬ তম বিবাহ বার্ষিকীতে তাঁর কর্মসূচি ছিলো বৃক্ষরোপন।আর বৃক্ষরোপন বলতে সেখানেও অন্যরকম ভাবনা। যেমন তিনি আমতলায় আম গাছ, বকুল তলায় বকুল গাছ, জাম তলায় জাম গাছ, চালতা তলায় চালতা গাছ রোপন করলেন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে। মোট ছটি গাছ মঙ্গলবার কোচবিহার শহরে তিনি রোপন করেছেন, আগামীতে আরও গাছ রোপন করবেন।গতবছর এই বিবাহবার্ষিকীতেই তিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার বিলিতে নামেন।গতবছর এই সময় করোনার দাপটে অক্সিজেনের অভাবে বহু মানুষের প্রানহানি ঘটছিলো। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে তিনি করোনা লকডাউনের সময় অসহায় গরিব মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিলি করেন বিবাহ বার্ষিকীতে।
বাড়িতে স্ত্রী পুত্র কন্যা ছাড়াও বৃদ্ধ বাবা মাও রয়েছেন শঙ্করের। বর্তমানে অগ্নিমূল্যের বাজারে বহু মানুষের সংসার পরিবার প্রতিপালন করাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সেখানে শঙ্করের মতো একজন সামান্য গাড়ি চালকের পক্ষেতো তা আরও চাপের।কিন্তু এরমধ্যেও অসামান্য কাজ করে চলেছেন শঙ্কর যা সত্যি স্যালুট জানানোর মতো বইকি।জলপাইগুড়ি নিবাসী আশ্বাস সংস্থার সম্পাদক তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী বনানী চৌধুরী পন্ডিতও শঙ্কর রায়ের এই মানবিক ও সামাজিক কাজের তারিফ করেন।