জীবনে বহু কিছু হাতছাড়া হলেও নেতাজির লেখা বানী হাতছাড়া করতে রাজি নন মহাশ্বেতাদেবী

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধেছে ভালোভাবেই।চলছে কিডনির রোগের নিয়মিত চিকিৎসা। সপ্তাহে তিনদিন ডায়ালিসিস গ্রহণ করতে হয়। রোগযন্ত্রণার মধ্যেও তিনি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের নিজে হাতে লেখা একটি বানী, ” সেবা ও ত্যাগ ব্যতীত স্বাধীনতা পাবো না” কখনোই হাতছাড়া করতে রাজি নন। শিলিগুড়ি মাল্লাগুড়িতে পুরনো দিনের কাঠের বাড়ি ছেড়ে কিছু দিন আগে শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার ফ্ল্যাটে আশ্রয় নিয়েছেন মহাশ্বেতা মহলানবিশ। বহু কিছুই তাঁর জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে। হারিয়েছেন বাবা নৃপেন্দ্রনাথ মহলানবিশ, মা মমতা মহলানবিশ, দাদা নিরঞ্জন মহলানবিশ, মাসি অনিতা বোস চৌধুরী সহ আরও বহু কিছু। কিন্তু নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের নিজে হাতে লেখা সেই বানী কখনো তিনি হাতছাড়া করতে রাজি নন। আসলে মহাশ্বেতাদেবীর মাসি অনিতা বোস চৌধুরী ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। পরাধীন ভারতে বিপ্লবীদের গোপনে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করতেন অনিতা বোস। রেঙ্গুনে ১৯৩৮ সালে নেতাজি তাঁর নিজে হাতে সেই বানী লিখে তুলে দিয়েছিলেন অনিতা বোসকে।পরবর্তীতে অনিতা বোসের হাত থেকে মহাশ্বেতা মহলানবিশ সেই বানী সংগ্রহ করে নিজের হেফাজতে সযত্নে রেখে দিয়েছেন। এই মহাশ্বেতাদেবীর আর একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বোসের আত্মীয়। বিজ্ঞানাচার্য জগদীশ চন্দ্র বোসের বাবা ভগবান চন্দ্র বোস এবং মহাশ্বেতাদেবীর মা মমতা মহলানবিশের ঠাকুরদা ঈশ্বর চন্দ্র বোস ছিলেন আপন ভাই। মহাশ্বতাদেবীর ঠাকুরদা প্রয়াত নগেন্দ্রনাথ মহলানবিশ একসময় জলপাইগুড়ির প্রখ্যাত আইনজীবী ছিলেন। মহাশ্বেতাদেবীর বাবা নৃপেন্দ্রনাথ মহলানবিশের একসময় শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডে পেট্রোল পাম্প ছিল। ১৯৬০ সালে শিলিগুড়ি মাল্লাগুড়িতে একটি বাংলো বাড়িতে ক্যুইন স্কুল নাম দিয়ে শিলিগুড়িতে ইংরেজি স্কুল স্থাপনে প্রথম অগ্রনী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন মহাশ্বেতাদেবীর মা মমতা মহলানবিশ, এমনটাই দাবি করেন মহাশ্বেতাদেবী।আজ আমরা যে মার্গারেট স্কুলের নাম শুনি তার নেপথ্যেও ছিল সেই ক্যুইন স্কুল। সে স্কুল স্থাপনে দুবিঘা জমি দিয়েছিলেন মমতাদেবী।সেনা বাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক সেই ক্যুইন স্কুলের অধ্যক্ষ হিসাবে কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন।স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাও নিয়োগ হয়।কিন্তু হঠাৎ এক বিপত্তি হওয়ায় সেই অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন দিতে না পারার জ্বালায় আত্মগোপন করেন।এরপর স্কুলের সকলে মিলে স্কুলটিকে হস্তান্তর করে প্রধান নগরের রামকৃষ্ণ বেদান্ত আশ্রমে।