নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃবিয়ের মরশুমে দৃষ্টিহীন সংগীত শিল্পীদের সংগীত প্রতিভাকে কাজে লাগাতে এবার শিলিগুড়িতে এগিয়ে এলো একটি ব্যান্ড পার্টি সংস্থা। মাঘ মাসের এই বিয়ের মরশুম শুরু হতেই সেই ব্যান্ড পার্টি সংস্থার তত্ত্বাবধানে পুরোদমে সংগীত প্রতিভা কাজে লাগাতে নেমে পড়েছেন কোচবিহারের দৃষ্টিহীন শিল্পী মিন্টু রায় এবং উত্তর দিনাজপুরের সোনাপুরের শিল্পী বাবলু বিশ্বাস। সেই ব্যান্ড পার্টির মালিক রতন দাস জানাচ্ছেন, দৃষ্টিহীন প্রতিভাবান শিল্পীদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে দিতে তাদের এই ভিন্নধর্মী প্রয়াস।
উত্তর দিনাজপুরের সোনাপুর নিবাসী বাবলু বিশ্বাস ছোট থেকেই দৃষ্টিহীন অথচ তার গলায় বহু গানের সুর খেলা করে। একইভাবে কোচবিহারের মিন্টু রায়ও তিন বছর বয়স থেকে দৃষ্টিহীন।্ কিন্তু তার গলায় উত্তরবঙ্গের মাটির গান ভাওয়াইয়াতো আছেই সঙ্গে অন্যান্য গানও দারুণভাবে খেলে। কিন্তু সুযোগের অভাবে তাদের সেই প্রতিভা ঠিকমতো কাজে লাগছিল না। প্রতিদিনই পরিবার নিয়ে তাদেরকে অভাবের মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছিল। এই খবরটি জানতে পেরে শিলিগুড়ি ঘোঘোমালির লক্ষী ব্যান্ড পার্টির মালিক রতন দাস তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর তার ব্যান্ডপার্টি দলে তাদেরকে কাজে লাগিয়ে দেন। বিয়ের মরশুম শুরু হতেই ওরা এখন ব্যান্ডপার্টি দলে পিয়ানো বাজিয়ে দুটো পয়সা রোজগার করছেন। এইভাবে এর আগে দৃষ্টিহীন জিতেন্দ্র ঠাকুর এবং দৃষ্টিহীন বাবলু দত্তকে কাজে লাগিয়েছেন রতন দাস। এই দৃষ্টিহীনরা দূর থেকে শিলিগুড়ি এসে বিয়ের মরশুমে রতন দাস এর বাড়ি থাকছেন। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া করছেন আর বিয়ে বাড়িতে গিয়ে নানান সুর বাজিয়ে কখনো বরপক্ষ,কখনও কনেপক্ষকে মাতিয়ে তুলছেন। রতন দাস জানালেন, এদের প্রতিভা তিনি আরো কাজে লাগাতে চান কিন্তু তাঁর সামর্থ্য কম। সেই হিসেবে সবাই যদি তার পাশে দাঁড়ান তবে তিনি আরো এগিয়ে যেতে চান। শিল্পী বাবলু বিশ্বাস এবং মিন্টু রায়ও রতন দাসের এই প্রয়াসে বেশ খুশি। তারা বলেন, আমরা দৃষ্টিহীন হলেও কিছু করতে পারি। সবাই যদি আরো এগিয়ে আসে তবে আমাদের মতো আরো অনেক দৃষ্টিহীন শিল্পীকে অবহেলিত অবস্থায় রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াতে হবে না। আর সরকার যদি দৃষ্টিহীন শিল্পীদের সর্বত্র ভাতার ব্যবস্থা করে দেয় তবে তারা ভীষণ উপকৃত হতেন