নিজস্ব সংবাদদাতা,শিলিগুড়ি, ১৭ সেপ্টেম্বরঃ করোনা আবহে ভাটা পড়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ দুর্গোৎসবে। পুজো এলেই শিল্পীরা মেতে ওঠেন নানান থিমে মন্ডপ ও প্রতিমা গড়তে। কিন্তু এবার শিল্পীদের শিল্পসত্বাকে গ্রাস করেছে করোনা ভাইরাস। তবুও এর মাঝেও মা দুর্গাকে নিয়ে অভিনব সৃষ্টির আনন্দে মেতেছেন শিলিগুড়ির ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড ঘোগোমালির এক যুবক মিঠু রায়। তিনি রঙ তুলি দিয়ে এক ছোট্ট টিপের ওপরে এঁকে ফেলেছেন দানবদলনী রূপী মা দুর্গাকে। শুধু দুর্গাই নয় বাদ যায়নি কার্তিক গনেশ লক্ষ্মী সরস্বতীও। মিঠুর আঁকা এই দেবদেবীর ছবি ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে দেশ বিদেশে। তার সৃষ্টি দেখতে অনেকেই চোখ রাখছেন আতস কাচে।
করোনা আবহে এবার থাকবে না পুজোর জাকজমকতা। তাতেই মন ভার প্রত্যেকের। এই ভারাক্রান্ত মনেই মা দুর্গাকে নিয়ে নতুন কিছু করার চিন্তা মাথায় আসে চিত্রশিল্পী মিঠু রায়ের। এরই মাঝে তার স্ত্রী সীমা সাহা রায় তাকে টিপের ওপর দুর্গার ছবি আঁকার পরামর্শ দেন। এরপরেই দেড় সেন্টিমিটার মাপের একটি টিপের ওপর এক্রেলিক রঙ ও তুলি দিয়ে মাত্র ২৫ মিনিটেই এঁকে ফেলেন দুর্গা প্রতিমা। এরপর মাত্র ১ সেন্টিমিটার মাপের এক একটি টিপের ওপর তিনি এঁকে ফেলেন কার্তিক গনেশ লক্ষ্মী সরস্বতীর ঠাকুরের ছবি। এরপর তিনি রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ড, ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড ও গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। ইতিমধ্যে তার আঁকা দুর্গাপ্রতিমা মনোনীত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডে।
মিঠু রায়ের এই কৃতিত্বেও খুশি তার বাবা প্রভাস রায়, মা মালতি রায় ও স্ত্রী সীমা সাহা রায়। এদিন মিঠুর মা মালতি রায় বলেন ছোট বেলা থেকেই অনেক কষ্ট করেই ছবি আঁকা শিখেছে তার ছেলে। আর্থিক সামর্থ ছিল না বড় কোন জায়গায় ছবি আঁকা নিয়ে কোন কোর্স করানোর। তবে নানান প্রতিকূলতার মাঝেও যে সে এত ভাল ভাল ছবি এঁকেছে তার জন্য তারা গর্বিত।
টিপের ওপর দুর্গার ছবি দেখতে অনেকেই আসছেন মিঠু রায়ের বাড়িতে। অনেকেই মাইক্রো আর্ট দেখতে চোখ রাখছেন আতস কাচে। শুধু টিপের ওপর দুর্গাই নয়, তার আঁকা বহু ছবি স্বীকৃতি আদায় করেছে দেশ বিদেশে। বহু সম্মান পেয়েছেন ফ্রান্স, দক্ষিন কোরিয়া, বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে। এখন একটাই আশা টিপের ওপর আঁকা দুর্গা প্রতিমার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।