করোনা নিয়ে সচেতনতার সঙ্গে পরিবেশ নিয়েও আজ সচেতনতা জরুরি

সজল কুমার গুহ( সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি সমিতি,শিলিগুড়ি শাখা) ঃপরিবেশ নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা শুরু করা হোক নতুন করে করোনার অতি- মারিতেও।করোনার দ্বিতীয় পর্ব বলা যায় শেষের দিকে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে তৃতীয় পর্ব নাকি শুরু হওয়ার পথে। মানছি করোনার থাবা থেকে থেকে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে চলছে। প্রতিরোধের ব্যবস্থাও চলছে নানা দিক থেকে।সেসব খুব ভালো কিন্তু তাই বলে পরিবেশ নিয়ে অবহেলা মোটেই মেনে নেওয়া যায় না।
বন ধংস চলে, জলের অপচয় চলে,বন সৃজন তেমন হয়না এরকম আরো অবহেলা মানা যায় না প্রকৃতি পরিবেশের প্রতি। বিশেষ করে প্লাস্টিক নিয়ে চরম উদাসীনতা মানা যায় না একদম, একসময় যখন শিলিগুড়ি ও আরও জায়গা প্লাস্টিক মুক্ত করার প্রয়াস চলছিল সেসব উদ্যোগ গেল কোথায়?
করোনার ভয়ে সব জুবুথুবু হলে কি চলবে, ঘুরে ফিরে মানুষের অস্তিত্ত সেই প্রশ্নের মুখে যে। শিলিগুড়ি শিবমন্দির ও আশেপাশের এলাকায় প্লাস্টিক এর ব্যবহারে যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ধারাবাহিকভাবে গতবছর পর্য্যন্ত। ইদানিংকালে তার বিন্দুমাত্র উদ্যোগ নেই যার ফলে বাজারে প্লাস্টিকের ব্যবহার যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে গেছে সেই সঙ্গে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জায়গায় জায়গায়। অতি শিক্ষিত,অর্ধ শিক্ষিত, সাধারণ মানুষের বেশীরভাগ অংশ উদাসীন এই ধরনের ব্যপারে ভাবটা এই যে তেমন কিছু নয়, এখন শুধু করোনা আর করোনা পর্ব তাও যদি ঠিক মতো পালন করতো সবাই। এমন উদাসীনতা যেমন মানা যায় না তেমনি যে বা যারা এখানে ওখানে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ফেলে দিচ্ছে সেটাও সহ্য করা যায় না, আবার দোকানদার যেভাবে দেদার বিক্রি ও ব্যবহার করে চলছে তাদেরো ক্ষমা করা যায়না, বিশৃঙ্খলার একটা সীমা থাকা উচিত, মানুষের। বাঁচা বাড়ার প্রশ্ন এভাবে অবহেলিত হবে বিশেষ করে করোনার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে?
আশার আলো কিছু কিছু সচেতন নাগরিক ও বেসরকারি সংগঠন এগিয়ে এসেছে প্লাস্টিক ইত্যাদি পরিস্কার করে ও গণ চেতনা বাড়াতে।সম্প্রতি, শিবমন্দির অঞ্চলের কিছু সচেতন মানুষ প্রয়াস ফাউন্ডেশন নামে একটা সংগঠন তৈরী করেছে যারা নিজহাতে গ্লাভস পরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নোংরা প্লাস্টিক, প্লাস্টিকের ব্যাগ তুলে বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিকভাবে। সেই সঙ্গে সচেতন করা শুরু করেছে। শিবমন্দির যুবা ও আরও দুই একটি সংগঠন করোনা কালে দারুণ কাজ করে চলছে, তবে প্রয়াস এর যুদ্ধ মহাকাল প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে।
সরকার প্রশাসন পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিনম্র আবেদন আপনারা দয়া করে একটু নড়েচড়ে বসুন করোনা যুদ্ধ সামিল দিয়েও,কারণ কোনোদিন হয়তো শিলিগুড়ি বা শিবমন্দির বাগডোগরার মুকুটে ” প্লাস্টিক শহর বা জনপদ বলে তকমা না লেগে যায়। প্লাস্টিক ছাড়া পরিবেশের অন্যান্য দিকগুলিও বেমালুম ভুলে গেলে হবে না, করোনার দোহাই দিয়ে।
—— সজল কুমার গুহ, শিবমন্দির, শিলিগুড়ি।