শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে করোনা সংক্রমণ, কোয়ারান্টাইনে দুই চিকিৎসক,পাঁচ নার্স

নিজস্ব সংবাদদাতা,শিলিগুড়ি, ১৬ জুনঃ এই প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লো শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসারত কোন রোগীর। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসারত ২৫ বছর বয়সী এক প্রসূতির শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ওই প্রসূতি হাসপাতালের সিসিইউ তে ভর্তি ছিলেন। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে সিসিইউ-তে ভর্তি ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এই দুই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে।

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মন্ডল জানিয়েছেন, শিলিগুড়ি পুর সভার ২৮ নম্বরের টিকিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ওই প্রসূতি গত ১১ জুন প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর ১২ জুন সন্তানের জন্ম দিলেও, জন্ম হওয়ার পরেই মৃত্যু হয় তার সন্তানের। এরপর ওই প্রসূতিকে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রসূতির শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ১৩ জুন রাতে ওই প্রসূতির স্যোয়াব সংগ্রহ করে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের ভি আর ডি এল-এ পাঠানো হয়। ১৫ জুন রাতে অর্থাৎ রবিবার ওই মহিলার স্যোয়াব টেস্ট রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে।

কিন্ত, সোমবার দুপুর পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ওই মহিলাকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত না করায়, হাসপাতলের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী হয়। অন্যদিকে করোনা আক্রান্ত ওই মহিলার সঙ্গেই সিসিইউতে ভর্তি ৬৫ বছর বয়সী মণিকুমার শর্মা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুতে চরম উদ্বেগ তৈর হয় রোগী এবং রোগীর আত্মীয়দের মধ্যেও। শেষ পর্যন্ত দুপুরের পরে করোনা আক্রান্ত ওই মহিলাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতল থেকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মন্ডল বলেন, পুরো বিষয়টি দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য্যকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, ওই প্রসূতির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ২ জন চিকিৎসক, ৫ জন নার্স এবং বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়ারানটাইন করা হয়েছে। অপরদিকে, জেলা হাসপাতালের আই সি ইউ তে ভর্তি ওই ব্যাক্তির লালাও পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ভি আর ডি এল-এ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার। সেই সঙ্গে করোনা আক্রান্ত ওই প্রসূতির সংস্পর্শে রোগী এবং রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে কারা কার এসেছিলেন, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। লালা রসের পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরেই ওই ব্যক্তির মৃতদেহ সৎকার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছেন সুপার অমিতাভ মন্ডল।

অপরদিকে, মৃত মণিকুমার শর্মা দার্জিলিং-এর বাসিন্দা এবং সম্প্রতি শিলিগুড়ির ইস্কন মন্দির সংলগ্ন এলাকায় থাকতেন। মৃতের ছেলে জানিয়েছেন, তার বাবাকে কিডনির সমস্যাজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। Post Views: 964