বাপি ঘোষ ঃ ওদের কেও ট্রেনে ভিক্ষে করে। কেও আবার প্ল্যাটফর্মে ঘুরেই ভিক্ষের কাজ সারে। সকালসন্ধ্যে ওদের মাথায় পেট চালানোর জন্য ভিক্ষের কথা মাথায় ঘুরতে থাকলেও কখনও কখনও ছবি আঁকার সৃজন ভাবনাও মাথায় খেলে। কখনও কারও ঠোঁটে ভেসে আসে ছড়া বা কবিতা। কেওতো আবার নৃত্য করতে ভালোবাসে। বৃহস্পতিবার দেশের স্বাধীনতা দিবসের দিন এইসব প্ল্যাটফর্ম শিশুদের স্বীকৃতি দিলো শিলিগুড়ি লিটারারি ফাউন্ডেশন।
সাখিনা খাতুন ভালো ছবি আঁকে। ওর হাতে বৃহস্পতিবার সকালে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় ভালো ছবি আঁকার জন্য। আবার তুফানের হাতেও পুরস্কার দেওয়া হয় ভালো ছড়া পাঠ করার জন্য। আসলে কদিন আগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কনসার্ন তাদের বর্ষপূর্তিতে এইসব প্ল্যাটফর্ম শিশুদের মধ্যে প্রতিভা উসকে দিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তাতে মালদা থেকে এনজেপি পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রেনে ভিক্ষা করা শিশুরা অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসের দিন এনজেপি স্টেশন লাগোয়া কনসার্নের জাগৃতি নামের কেন্দ্র অঞ্চলে অনুষ্ঠান হলে ওইসব শিশুদের সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি লিটারারি ফাউন্ডেশন থেকে লেখক নুরুল হাসান শিশুদের হাতে এদিন চিকেন বিরিয়ানির প্যাকেট তুলে দেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ শীর্ষেন্দু পাল। নুরুলবাবু এবং ডাক্তার পাল এসব শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষারও আয়োজন করেন প্রায়ই। ডাঃ শীর্ষেন্দু পাল বলেন, এসব শিশুর মধ্যেও প্রতিভা আছে। ফুল এখানেও ফোটে। কিন্তু অযত্ন ও অবহেলায় খুব শীঘ্রই এসব ফুল তাদের সুগন্ধ হারিয়ে ঝড়ে যায়। কনসার্নের তরফে তাপস কর্মকার জানান, তারা বর্ষপূর্তিতে নৃত্য, বসে আঁকো, ছড়া বা কবিতা পাঠের আয়োজন করলে ট্রেন ও স্টেশনে ভিক্ষা করা এইসব শিশুরাা অংশ নেয়। এদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে যারা স্বীকৃতি পেয়েছে তারা হলো, লালা, রাকেশ, বাবলি কুর্মি, রাজমালয়া কুর্মি, কিসকা কুর্মি সহ আরও অনেকে।
এদিন সকালে জাগৃতির পাশে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়। পতাকা উত্তোলনে ওই শিশুরাও অংশ নেয়। লেখক নুরুল হাসান বলেন, তারা এইসব শিশুকে মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য কনসার্নের জাগৃতির কাজে সহায়তা করেন।