সঙ্গীতকে আশ্রয় করে বাঁচার আকাঙ্খা তাঁর ছোট থেকেই, জানাচ্ছেন বাবলি ব্যানার্জী

শিল্পী পালিত ঃ আজ আমাদের এই ওয়েবনিউজ পোর্টালের আত্মকথা বিভাগে শিলিগুড়ি সুভাষ পল্লী থেকে লিখেছেন সঙ্গীত শিল্পী বাবলি ব্যানার্জী—
—–_—–
আমি বাবলি ব‍্যানার্জি। জন্ম সূত্রে একটি সাংস্কৃতিক পরিবারের আবহে বেড়ে ওঠা :সুর কে ভালোবাসতে শেখা… মা অসাধারণ কীর্তন গাইতেন.. বাবা বেহালা বাজাতেন : যদিও বাবার কর্ম জীবনের তাগিদে দুজনের কারোরই সেই অর্থে সঙ্গীতিক প্রতিভার বিস্তার সম্ভব হয় নি. কিন্তু সংগীতের বোধ ও রস সন্তানদের মধ্যে সঞ্চালিত করতে সফল হয়েছিলেন… বাড়ির পরিবেশে সংগীতের গুরুত্ব অসীম ছিলো
.সুর কে ভালোবেসে ফেলি শৈশবেই… সকাল.. সন্ধ্যা নিয়ম করে রেওয়াজ করা একটা অলিখিত বিধি ছিলো… তাছাড়া পরিবারের কিছু সদস্য “আকাশ বাণী কলকাতা “র নিয়মিত শিল্পী হওয়ার দরুন বহু গুণী মানুষের যাতায়াত ছিলো বাড়িতে ও চর্চাও ছিলো..
যতটা মনে পরে আমার গুরু শিক্ষা শুরু হয় বছর 4থেকে… আমার প্রথম শিক্ষা গুরু ছিলেন ‘শ্রী অঞ্জন মুখোপাধ্যায় ‘যদিও প্রাথমিক শিক্ষাটুকু মা ও বাবার কাছেই হয়… এছাড়া দিদি.. দাদারাও নিয়ম করে তালিম দিতেন… যাইহোক শ্রী মুখোপাধ্যায় শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম শুরু করেন.. রাগ.. বিস্তার.. সবটুকুই উনি ভালোভাবেই তালিম দিচ্ছিলেন.. কিন্তু শৈশবের চঞ্চল্য হোক বা ধৈর্য্য ওই বয়সে আমার ছিলো না.. তাই একটা ভীতি তৈরী হয়ে গেল শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রতি.. যেটা আমার মা প্রথম বুঝতে পারেন.. যদিও মাস্টারমশাই ছাত্রীর মধ্যে প্রতিভার আভাস পান এ কথা বাবা মাকে বলতে শুনতাম… কিন্তু আমার ওনাকে দেখলেই কেঁদে ফেলা লক্ষ‍্য করে বাবা ওনাকে কিছু দিন বন্ধ রাখার কথা বলেন… এখনো শুনি মাস্টারমশাই আমার খবর নেন… যেটা এই বয়সে এসে উপলব্ধি করি যে কি বিশাল প্রাপ্তি….

যদিও প্রাত্যহিক শিক্ষা কখনো বন্ধ হয়নি… একটু বড় হওয়ার পরে আবার বাবা শ্রী অনিল দত্ত মহাশয়কে গুরু হিসেবে নিয়োগ করেন.. উনি ভজন.. নজরুল গীতি.. রবীন্দ্র সংগীত… লোকসংগীত ইত্যাদি শেখাতেন.. উনিও আশাবাদী ছিলেন.. কিন্তু পরীক্ষার কথা বললেই আমি অস্থির হয়ে পড়তাম.. এক্সটার্নাল এর সামনে গিয়ে পরীক্ষা দেবো না.. অবশ্য জোর করে দেওয়ানওনি… শুধু সংগীত ভালোবেসে শেখাটাই উদ্দেশ্য ছিলো… তাই সে কোনো স্বীকৃতি হয়তো নেই আমার সংগীত জীবনে কিন্তু সংগীতকে ভালোবাসা ও আশ্রয় করে বাঁচতে চাওয়ার যে আন্তরিক আকাঙ্খা সেটা শৈশব থেকেই রক্তে…. এই ভাবেই চলছিল…. তারপর উঃ বঙ্গে চলে আসা.. ফলে দীর্ঘ দশ বছর সংগীত থেকে দূরে চলে যাওয়া… নিজের সন্তানকে গড়ে তোলার চেষ্টায় ডুবে যাওয়া… তবে বাড়িতে শোনার অভ্যেস কখনো বন্ধ হয় নি… তবে সন্তানেরই প্রবল আগ্রহ ও কিছু শুভ মানুষের অনুপ্রেরণায় আবার শুরু করার চেষ্টা করি… উঃ বঙ্গের প্ৰখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী শ্রীমতি কুমকুম মুখোপাধ্যায় এর কাছে.. আবার পথ চলা শুরু… বেশ কিছু অনুষ্ঠান করার সুযোগ হয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দাতা বেতার তরঙ্গে… কিছু মঞ্চে ও..2018 নিজের একটি ছোট সংস্থা তৈরী করি.. বন্ধুদের ও ছাত্রীদের আগ্রহে “মনন “নামে… এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে আমার সংগীত প্রেম… ও শ্রদ্ধা।
করুনাময়ী ব্যানার্জী
C/ও কৌশিক ব্যানার্জী
121/5 উত্তরা আপার্টমেন্ট
এ. টি. মুখার্জী রোড.. সুভাষপল্লী..
শিলিগুড়ি