নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ পরিবারের প্রধান ইন্দ্রজিৎ দাস তবলা বাজান। তার স্ত্রী অনুরাধা দাস সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক-সবেতেই পারদর্শী। আর তাদের দুই কন্যার মধ্যে বড় মেয়ে অরুন্ধতী দাস পড়াশোনার পাশাপাশি সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তিতে ডুব দিয়েছে। ছোট মেয়ে অস্মিতা দাস সঙ্গীত, নৃত্য, অঙ্কনে নিজেকে সুন্দর করে তোলার কাজে নেমেছে দ্বিতীয় শ্রেণী থেকেই। সৌজন্যে ইন্দ্রজিৎ দাস ও অনুরাধা দাস।
শিক্ষার পাশাপাশি মানুষের খুবই প্রয়োজন সংস্কৃতি। সুস্থ সংস্কৃতি বা রুচি বোধ পরিবারে যত ভালো হবে সমাজ তত উন্নত হবে। উন্নত রুচি বা সংস্কৃতি ভালো হলে সে সমাজের বিপথগামীতাও তত আটকে দেওয়া যায়। কিন্তু আজকাল অনেক পরিবার বা অনেকের ব্যক্তিগত জীবনে শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতির বড় অভাব। অবক্ষয় যেন সবকিছু গ্রাস করছে। যদিও এরমধ্যেই অনেক পরিবার সংস্কৃতিকে ভালোবেসে নিজেরা এবং তাদের সন্তানদের সেভাবেই গড়ে তুলছেন। উত্তরবঙ্গের অন্যতম সংস্কৃতি নগরী হিসাবে চিহ্নিত জলপাইগুড়ি শহরের দেশবন্ধুপাড়া নিবাসী এক দম্পতি সেভাবেই গড়ে তুলছেন তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।
ইন্দ্রজিৎ দাস। ভালো তবলা বাজান। ছোট থেকেই তার নেশা তবলা বাজানো।প্রথমে তিনি তার কাকা প্রয়াত দীপক কুমার দাসের কাছে তবলার তালিম নেন। তারপর সত্যব্রত ভট্টাচার্য এবং সুবীর অধিকারী।জলপাইগুড়ি থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রীকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে অনুষ্ঠান করিয়ে এনেছেন। পুরস্কারও আছে অনেক।
অনুরাধা দাস। ইন্দ্রজিৎবাবুর স্ত্রী। সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক সবেতেই পারদর্শী। প্রচুর পুরস্কারও আছে। নাটকের অনেক প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে পুরস্কার নিয়ে এসেছেন বাড়িতে। কলকাতাতেও অনেকবার গিয়েছেন এই সংস্কৃতির টানেই।
বাবা তবলা শিল্পী। মা সঙ্গীত, নৃত্য ও নাট্য শিল্পী। ফলে তাদের বড় মেয়েও হয়েছে তেমনই। অরুন্ধতীতো পড়াশোনাতেও সেইরকম। সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা যে মগজকেও করে তোলে অন্যরকম। তার জ্বলন্ত উদাহরন অরুন্ধতী। সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি চর্চার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে পড়াশোনা চালিয়ে অরুন্ধতী এবার উচ্চ মাধ্যমিকে ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। জলপাইগুড়ির বিভিন্ন অনুষ্ঠান মঞ্চে তার জন্য যেন অন্তত একটি দুটি করে পুরস্কার এসে ধরা দেয়।
ছোট্ট মেয়ে অস্মিতা। ওই দম্পতির ছোট মেয়ে। দিদি অরুন্ধতীর মতো সেও যেন টেক্কা দিয়ে বাবামায়ের কন্যারত্ন। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে অস্মিতা। সঙ্গীত, নৃত্য, অঙ্কন সবেতেই এই বয়স থেকে নিজেকে তুখোড় করে তুলছে। অবশ্যই বাবামায়ের উৎসাহ ও পরিচালনা। ইন্দ্রজিৎবাবু ও তার স্ত্রী দুজনেই বলেন, সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা ইতিবাচক ভাবনাকে জোরদার করে তোলে। মন থাকে সুস্থ। তাদের এই সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার জেরে এলাকার বহু ছেলেমেয়ে তাদের সঙ্গীত ও নৃত্য শিক্ষা কেন্দ্রে ভিড় করছে।