নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ ৪৭টির মধ্যে ৩৭টি আসনে জয়ী হয়ে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড দখল করলো রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস।অপরদিকে বিজেপি পাঁচটি, সিপিএম চারটে এবং কংগ্রেস একটি আসনে জয়ী হয়ে মূলত বিরোধী আসনের ভুমিকাতেই থাকছে।গত পুরবোর্ডে বিজেপির ছিলো দুটি আসন, সেখান থেকে এবার তাদের আসন হলো পাঁচ। এই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্যভাবে যারা পরাজিত হয়েছেন তাঁরা হলেন সিপিএমের প্রাক্তন মেয়র ও মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, বিজেপি প্রার্থী নান্টু পাল, সিপিএম প্রার্থী মুকুল সেনগুপ্ত, স্নিগ্ধা হাজরা, তৃনমুল প্রার্থী পরিমল মিত্র, খুশবু মিত্তল, প্রদীপ গোয়েল,বেদব্রত দত্ত, নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার, কংগ্রেস প্রার্থী সুবীন ভৌমিক,তপন দত্ত । পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমুল প্রার্থী গৌতম দেব তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজন সরকারকে ৩৪৩৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। গৌতমবাবু পেয়েছেন ৪৮২০টি ভোট, বিজন সরকার পেয়েছেন ১৩৮৪টি ভোট।ওই ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী অসীম সাহার প্রাপ্ত ভোট ১০০৬টি, পরিমল সূত্রধরের প্রাপ্ত ভোট ১২২৮টি। শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ থেকে ৪৪ অর্থাৎ জলপাইগুড়ি জেলার ভক্তিনগর ও এনজেপি থানার ১৪টি ওয়ার্ডে সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছে গেরুয়া ও লাল শিবির। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভার অধীন শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত সব আসন তৃনমূলের দখলে। সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী ও মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মোট ভোট পেয়েছেন ১৪৪৭টি, আর ওই ওয়ার্ডে জয়ী তৃনমুল প্রার্থী আলম খান পেয়েছেন ১৯২৯টি ভোট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ির নতুন মেয়র হিসাবে গৌতম দেবের নাম ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন। শিলিগুড়ির এই ফলাফল সম্পর্কে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিগত দশ বছর ধরে রাজ্যে তৃনমুল ক্ষমতায় থাকলেও শিলিগুড়ি পুরবোর্ড দখল করতে পারে নি তৃনমুল। ফলে শহরবাসী বারবার না পাওয়ার গল্প শুনছিলেন আর শহরও পিছিয়ে পড়ছিল। সদ্য সমাপ্ত বিধান সভা ভোটেও এমনভাবে শিলিগুড়িতে হুজুগ তোলা হয়েছিল যে শিলিগুড়ির মানুষ ভেবেছিলেন রাজ্যে হয়তো বিজেপি বা বামেরা ক্ষমতায় আসবে। ফলে বিধান সভায় শিলিগুড়ির মানুষ বিজেপিকে বেছে নেন। কিন্তু রাজ্যে আবারও বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় আসাতে শিলিগুড়ির মানুষের ভুল ভেঙেছে, এবার শিলিগুড়িতে পুরবোর্ড এককভাবে তৃনমুলকে না দিলে শিলিগুড়ি আবারও ভয়ানক পিছিয়ে পড়বে। তাই বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃনমূলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থী থাকলেও তৃনমূল প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে মানুষ বিভিন্ন ওয়ার্ড বেশি বেশি করে তৃনমুল প্রার্থীদের সমর্থন করেছেন।