নকশালবাড়ির ধীমাল জনজাতিদের গ্রামে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ মঙ্গলবার মহাসপ্তমীর সকাল থেকে শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির ধীমাল অধ্যুষিত গ্রাম পূর্ব কেটুগাবুরজোত মাল্লাবাড়ি এলাকায় বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির বসে। শিলিগুড়ি থেকে বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ শীর্ষেন্দু পাল সেই গ্রামে গিয়ে ধীমাল জনজাতি এবং অন্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তারপর তিনি পিছিয়ে পড়া ওই জনজাতির মানুষদের মধ্যে বিনামূল্যে ওষুধ বিলি করেন। ডাক্তার শীর্ষেন্দু পাল জানিয়েছেন, তাঁরা এদিন সেই এলাকায় রক্তের সুগার নির্নয়ের পাশাপাশি ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করেন। তাঁরা লক্ষ্য করেছেন ধীমাল সম্প্রদায়ের সব মহিলাই অপুষ্টি বা রক্তাল্পতায় ভুগছেন। অপুষ্টি বা রক্তাল্পতা থেকে তাদের মধ্যে অন্যান্য রোগব্যাধি বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে ধীমাল সম্প্রদায়ের প্রানপুরুষ তথা শিক্ষক গর্জেন কুমার মল্লিক বলেন, এখন গোটা দেশে সবমিলিয়ে ধীমাল সংখ্যা দুহাজার। শিলিগুড়ি মহকুমার তরাইয়ের নকশালবাড়ি এবং খড়িবাড়িতে তাদের বসবাস। এই আদিম জনজাতির মহিলাদের মধ্যে অপুষ্টি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার কারন বহু। গর্জেনবাবু বলেন, এখন আগের মতো নদীতে জল থাকে না।ফলে মাছও কমেছে। মাছ খাওয়ার প্রবনতাও অনেক কমেছে। ধীমালদের মধ্যে আগের মতো শিকার করার প্রবনতাও কমেছে। আগে তাঁরা বন্য প্রাণী শিকার করে খেতেন।এছাড়া ধীমাল পরিবারগুলো অভাব অনটনে ভুগছে।অভাব অনটনের জেরে ধীমাল মহিলাদের মধ্যে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রবনতা কমেছে। ফলে তাদের মধ্যে রক্তাল্পতা দেখা দিচ্ছে। ধীমাল মহিলা এমনকি পুরুষদের মধ্যেও দ্রুত বার্ধক্যজনিত রোগের প্রবনতাও বাড়ছে।অভাব অনটন চলতে থাকায় অধিক সন্তানের জন্ম দেওয়া হলে তাদের খাইয়েদাইয়ে মানুষ কি করে করা হবে, এ প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় ধীমাল মায়েদের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের প্রবনতাও ব্যাপক দেখা দিয়েছে। আর তা থেকেও তাদের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারন হতে পারে বলেও মনে করেন গর্জেনবাবু।