আগমনীর আরাধনা — একটি মানবিক আবেদন

*আগমনীর আরাধনা*
জনৈক শুভানুধ্যায়ী ( খবরের ঘন্টা) :

*বিল্বমূলে জাগছেন কৈলাসবাসিনী। আলোর আলো ।শুভ- অশুভ তারই রূপ ,তবু তাঁর দশপ্রহরণ ধ্বংস করুক অশুভ চেতনাকে; তাঁর জ্ঞানজ্যোতি ছিন্নভিন্ন করে দিক সব ভ্রান্তি, মোহ, অন্যায়, অপ্রেম। নিখিল মাধুর্যের আশ্রয় বিশ্ব জননীকে আহবান করে যেন নির্মূল করে দিতে পারি কঠোরতা নিষ্ঠুরতা। নিরাময় হোক সকলের দেহের মনের যত ক্ষত। সবাইকে আহ্বান করি আগমনীর আরাধনায় বৃহৎ ুর পূজার পূজারী হতে*
শ্রীযুক্ত জিতেন সূত্রধরের দুই সন্তান দীপঙ্কর সূত্রধর এবং তাপসী সূত্রধর। কিছুদিন আগে এই পরিবারটিকে আমরা পাই শিলিগুড়ি ঘোঘোমালি চয়ন পাড়া সূত্রধর কলোনিতে। দুই ভাই বোন দুরারোগ্য স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হয়ে চলৎ শক্তি রহিত এবং তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাও বর্তমানে খুবই অসুস্থ। ছোট্ট টিনের দু কামরার বিদ্যুৎবিহীন ঘরে পরিবারটি কর্মহীন অবস্থায় অনাহারক্লিষ্ট জীবন কাটাচ্ছিলেন। বর্তমানে কিছুদিন হল একজনে সহৃদয় মানুষের সাহায্যে ওদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়েছে এবং আমাদেরই আরেক দাদা তিনি হ্যান্ড পাম্প লাগিয়ে ওদের প্রাত্যহিক জলের সমস্যার সমাধান অনেকটা করেছেন, এনারা ছাড়াও আরো অনেক সুন্দর মনের মানুষ এই অসহায় পরিবারটির জন্য এগিয়ে এসেছেন। জিতেনবাবুর কন্যা তাপসী এই বিপরীত পরিস্থিতিতেও এমএ পাস করেছেন এবং কম্পিউটারের বেসিক শিক্ষা নিয়েছেন। দুই ভাই বোনের লড়াকু মানসিকতা আমাদের ভালো লাগে। সহৃদয় কিছু ভক্তবৃন্দের সাহায্যে দুই ভাইবোনের চিকিৎসা ডক্টর মলয় চক্রবর্তীর অধীনে করা হয়েছে। ডাক্তার মলয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই স্নায়ুর রোগের বর্তমানে একমাত্র উপায় কিছু ঔষধ, ফিজিওথেরাপি এবং পুষ্টিকর খাদ্য। ফিজিওথেরাপি বা যোগব্যায়ামের জন্য আমরা যোগাযোগ করতে পেরেছি শিবানন্দ বেদান্ত যোগা আশ্রমের( মাটিগাড়া হিমুলের নিকট )যোগ শিক্ষিকার সঙ্গে। তিনি খুব সহৃদয়তার সঙ্গে দুই ভাই বোনের যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু করেছেন। যোগ শিক্ষিকা জানিয়েছেন, এনারা ভালো হয়ে যাবেন। দুই ভাই বোনের ফিজিওথেরাপির মাধ্যমেও চিকিৎসা কয়েকজন সহৃদয় মানুষের সহায়তায় শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে অসহায় দু’ভাইবোনকে তাদের বয়স্ক অসুস্থ পিতা মাতা ( জিতেনবাবু এবং তার স্ত্রী) দেখাশোনা করে থাকেন । কিন্তু জিতেনবাবু এবং তার স্ত্রীরই চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচ মাসে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। তাপসী যেহেতু সেলাই এবং এমব্রয়ডারি সংক্রান্ত কাজ বিছানায় বসে করতে পারে তাই সে চায় কিছু সেলাই করে রোজগার করতে এবং জিতেনবাবুও তার ভীষণ অসুস্থতা সত্ত্বেও প্রাণপণ চেষ্টা করে থাকেন কিছু হালকা কাঠের কাজ করতে । তাদের এই জীবন যুদ্ধকে আমাদের শ্রদ্ধা সহ প্রণাম। কিন্তু পরিবারটির আর্থিক প্রয়োজন অনেকটাই। সেহেতু এই পরিবারটির জন্য আমরা সবার কাছে আবেদন রাখছি –এই ভীষণ বিপদের দিনে ওদের পাশে থাকবার জন্য। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে এই পরিবারটিকে সহায়তা দিয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফেরানো যাতে তারা নিজেরা সুস্থ হয়ে স্বাবলম্বী জীবন কাটাতে পারেন।
এবছর রাখী পূর্ণিমার দিনে অনেক মানুষ তাদের বাড়িতে এসেছিলেন এবং তাদেরকে খুব আনন্দ দিয়ে গেছেন বারবার তাদের কথা বলতে বলতে দীপঙ্করদের উজ্জ্বল মুখগুলো আনন্দে ভরে যাচ্ছিল। আরো জানা গেল যে তাদের বাড়ির সামনেই প্রতিবছর দুর্গাপূজা হয় ,ওদের খুব ইচ্ছে দুর্গা মাকে অঞ্জলি দেওয়ার কিন্তু ওরা যে চলৎশক্তি রহিত কিভাবেই বা পূজা মন্ডপে গিয়ে পুজো অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবে। দীপঙ্কর বলে – ” জানো দাদা , একটি সংস্থা থেকে আমাদের দুধ আর ডিম প্রতিমাসে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিছুদিন তারা দুধ, ডিম পৌঁছে দিয়ে বর্তমানে এই কার্য বন্ধ করে দিয়েছেন । আমাদের এখন কাজ করবার বয়স কিন্তু এই বয়সেই অথর্ব হয়ে পরলাম। আমরা কাজ করে খেতে চাই দাদা ।
মায়ের কাছে আমাদের এটাই প্রার্থনা- আমরা কষ্ট সহ্য করবার শক্তি যেন পাই এবং যেন কাজ করে খেতে পারি ” । দীপঙ্করের কথাগুলো আপাতত শেষ হলো, ওদের ঘরটা নিস্তব্ধ হল… এই নিস্তব্ধ ঘর কত অব্যক্ত ব্যথার কথাই না প্রকাশ করে চলেছে.. ওর কথা শুনতে শুনতে চিন্তা হচ্ছিল ,আমরা কি সবাই মিলে পারিনা ওদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে? পারিনা যাতে ওরা সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচে …. মুখ তুলে চেয়ে দেখি সূত্রধর পরিবারের সবার চোখে জল ।
এখানে জিতেনবাবুর মোবাইল ফোন নাম্বার +919434826307
এবং ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার details–Jiten Sutradhar,Central Bank of India,A/c no- 3832328819 , IFSC CODE: CBIN0284223 দেওয়া হলো । সকল সহৃদয় ব্যক্তিবর্গকে অনুরোধ করা হল এই পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়ে শিবজ্ঞানে জীবসেবার এই পুণ্য যজ্ঞে ব্রতী হওয়ার জন্য।############################

একবছর পর জগজ্জননী পুজো নিতে আসছেন। তুমি এসো—কেমন করে বলব? তিনি তো আছেন আমাদেরই মধ্যে চেতনা হয়ে, ক্ষুধা-নিদ্রা হয়ে, ভ্রান্তি হয়ে। বরং বলি—তুমি জাগো। আমাদের এই
ক্ষুদ্র ‘আমি’কে তোমার অপ্রতিহত তেজে তুচ্ছ করে জেগে ওঠো মা! ‘যাহা-কিছু আছে সকলই ঝাঁপিয়া/ ভুবন ছাপিয়া, জীবন ব্যাপিয়া’ তুমি জাগো।🙏🪷🙏