শিল্পী পালিত ঃঃ আজ আত্মকথা বিভাগে পরিবেশপ্রেমী ক্ষমা বোসের কথা মেলে ধরছি। পরিবেশের জন্য সবসময় কাজ করে চলেছেন ক্ষমাদেবী। শুনুন তার কথা—
—-আমি ক্ষমা বোস। শিলিগুড়িতেই আমার বেড়ে ওঠা।বাবার ছিল চা বাগানে কর্মস্থল।মা আমাদের ভাইবোনেদের নিয়ে দেশবন্ধু পাড়াতে থাকতেন।প্রথমে দেশবন্ধু পাড়া দুই নম্বর শিশু বিদ্যালয়ে থেকে পড়াশোনা শুরু করে তারপর জ্যোৎস্নাময়ী বালিকা বিদ্যালয় হয়ে শিলিগুড়ি কলেজ।মাকে ঘিরেই ছিল জীবন।আজ এই পরিবেশের জন্য, এই সমাজের অসহায় মানুষের জন্য যেটুকু করি তা সবই মায়ের কাছ থেকেই পাওয়া।মাই আমার প্রেরনা। বৃক্ষ রোপন,পরিবেশ রক্ষার জন্য কিছু করা আমার নতুন শখ নয়,এ আমার বহু দিনের অভ্যাস।ছোট বেলায় মাকে দেখেছি বর্ষা এলেই গাছ লাগাতে।আমাদের বাড়িতে মায়ের তৈরি বাগানে কত যে ফল, ফুল ও সবজি হতো! পরিবেশকে ভালবেসে পরিবেশের জন্য কাজ করবো বলেই HNAF এ যোগ দিয়েছি।জীবনে যাই করি না কেন তা মনের অন্তর থেকে করি।অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তি খুঁজে পাই।যেটুকু করি না কেন তা খুবই সামান্য। আমার ক্ষমতা খুবই সীমিত।তবুও সব সময় এই শহরে যে কোনো কাজে দৌড়ে যাই এবং তা ভালোবেসে অন্তর থেকে করি। 2018 তে স্বামী চলে গেছেন।একমাত্র ছেলে বৌমা অ্যাডভোকেট। ওরাও সব কাজে আমাকে উৎসাহিত করে। তাই সব সময় আমার মনে হয় যতদিন বাঁচবো নিজেকে যেন সমাজের সব কাজে নিয়োজিত করতে পারি। নিজেকে নানান কাজে ব্যাস্ত রাখলেই আমিও ভালো থাকবো।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি শিলিগুড়ি আজ নানা ভাবে দূষিত।শিলিগুড়ি থেকে প্লাষ্টিক ক্যারি ব্যাগ নির্মূল করার লক্ষ্যে শিলিগুড়ি পরিবেশ বাঁচাও মঞ্চ গঠন করে আজও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।”রক্ত দান জীবন দান ” এই মন্ত্রকে অবলম্বন করে শিলিগুড়ি ব্লাড ডোনেশন ফোরামের হয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমরা ক্যাম্প করে রক্ত সংগ্রহ করতে সাহায্য করি।থ্যালাসেমিয়া নিয়ে প্রচার করি।সীমিত ক্ষমতা তবুও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ডাক পেলেই ছুটে যাই।এই ভাবেই আমার সৌমিতে যাওয়া।সৌমিতে আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে গিয়ে কাজ করি।অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তি খুঁজে পাই। এসবের বাইরে নিজের জন্যও কিছু করতে ভালো লাগে।তাই Humans rights & anti crime organijation & 2k North east আয়োজিত সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ডাইরেক্টর্স চয়েসের মুকুট লাভ করি এবং আমাকে বেস্ট এনার্জেটিক লেডির সন্মান দেওয়া হয়। অবসর সময়ে কবিতা পড়ি, ও বলি। সময় পেলেই টিভিতে ফুটবল খেলা দেখি। ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ উদযাপনে আমন্ত্রিত হয়ে নিজেকে ধন্য মনে করেছি। যেখানেই যাই সবার ভালোবাসা পাই এ টুকুই যথেষ্ট আমার কাছে । আমার মতো একজন সামান্য মহিলার সমাজের জন্য যেটুকু কাজ করি তা সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য খবরের ঘন্টাকে অশেষ ধন্যবাদ এবং বাপি ঘোষ ও শিল্পী পালিত কে আমার অন্তরের শুভেচ্ছা জানাই। সব শেষে একটা কথাই বলব, যাই করি সংসারকে বাদ দিয়ে নয়।এই সংসারকে নিয়েই বাইরের পৃথিবীর কথা ভাবি।