নিজস্ব প্রতিবেদন : তামিলনাড়ু বা দক্ষিন ভারত থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এবার শিলিগুড়িতে আসা শুরু করেছেন। ফলে অত্যন্ত কম খরচে এবার শিলিগুড়ি থেকেই রোগীরা দক্ষিন ভারতের চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারেন। তামিলনাড়ুতে যেসব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাদের ফী নেন তিন হাজার টাকা তাঁরাই এবার শিলিগুড়ি এসে মাত্র সাতশ টাকা ভিজিটে রোগী দেখা শুরু করছেন।আর এরজন্য শিলিগুড়িতে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। তৈরি হচ্ছে আরও সব পরিকাঠামো।ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেও চেন্নাইয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যাতে শিলিগুড়ির রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারেন, তার প্রয়াস শুরু হয়েছে। তামিলনাড়ুর সালেমে অবস্থিত বিনায়ক মিশন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সঙ্গে এ বিষয়ে কামতি হেল্থ কেয়ার এন্ড ডায়াগনস্টিকের চুক্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি সেবক রোডের তিন মাইলে অবস্থিত বিশাল মেগা মার্টের ওপরতলায় সমগ্র বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিনায়ক মিশন সুপার স্পশালিটি হাসপাতালের মার্কেটিং ডিরেক্টর অশোক মালাকার এবং কামতি হেল্থ কেয়ারের ডাঃ মনীশ কামতি।তাঁরা জানান,শিলিগুড়ি যেহেতু উত্তর পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার এবং প্রচুর মানুষ শিলিগুড়ি আসেন চিকিৎসার জন্য সেই কারনে তাঁরা শিলিগুড়িতে আধুনিক হেল্থ সিটি গড়ে তুলতে চান। চিকিৎসা পরিষেবাকে তাঁরা শুধু ব্যবসার দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করছেন না,চিকিৎসা পরিষেবাকে তাঁরা একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবসেবা হিসাবে দেখছেন। রোগী সাধারণ শিলিগুড়িতে দিনের পর দিন লক্ষ লক্ষ টাকা চিকিৎসার পিছনে খরচ করবেন আর তাদের রোগটিও চিহ্নিত হবে না এবং শেষমেষ সর্বস্বান্ত হয়ে তাঁরা কপাল চাপড়ে চলবেন এই প্রথা বেশিদিন চলতে পারে না।টাকা যখন রোগীর থেকে নেওয়া হবে তখন তাঁর সঠিক রোগ নির্নয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে, এই উদ্দেশ্য নিয়ে এক অন্যরকম ভাবনা নিয়ে তাঁরা শিলিগুড়িতে এসে কাজে নেমেছেন বলে এদিন জানিয়েছেন অশোকবাবু এবং ডাঃ মনীশ কামতি। তাঁরা জানিয়েছেন, যেসব রোগীর চিকিৎসা তাঁরা শিলিগুড়িতে বসে করতে পারবেন না তাদেরকে তাঁরা তামিলনাড়ুর সালেমে বিনায়ক মিশন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। চেন্নাইয়ে নেমে কোয়েম্বাটোর যাওয়ার যে কোনো ট্রেনে সালেম মাত্র পাঁচ ঘন্টার পথ।কাটপাড়ী বা ভেলোর স্টেশন থেকে সালেম মাত্র তিন ঘন্টার পথ।সালেম স্টেশনে নেমে ভীমস বা বিনায়ক মিশন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নাম লেখা এম্বুলেন্স পাওয়া যায়। সেই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হলে বহু সুবিধা পাচ্ছেন রোগী সাধারণ। এক)বিনামূল্যে রোগী ও তার আত্মীয়দের লন্ড্রি সার্ভিস, দুই)বিনামূল্যে রোগীর জন্য সারা দিনের বাঙালি খাবার,তিন)বিনামূল্যে বাঙালি রোগীদের দোভাষী পরিষেবা, চার)বিনামূল্যে হাসপাতালের সঙ্গে অনলাইন ও অফলাইনে আলোচনা, পাঁচ) বিনামূল্যে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য কসমেটিকস সামগ্রী, ছয়) বিনামূল্যে সালেম রেলওয়ে স্টেশন থেকে পিকআপ এবং ড্রপ, সাত) বিনামূল্যে সালেম এয়ারপোর্ট থেকে পিকআপ এবং ড্রপ, আট) বিভিন্ন কোম্পানির মেডিক্লেম সেখানে গ্রহণ করা হয়।এর বাইরে আরও অনেক সুযোগ সুবিধা। ফলে দক্ষিন ভারতের বিশ্বমানের চিকিৎসা পরিষেবা এখন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত বাঙালির হাতের মুঠোয় বলে জানাচ্ছেন অশোকবাবু।শিলিগুড়িতে সেই তামিলনাড়ু থেকে ১২ ফেব্রুয়ারী দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসছেন। একজন ডাঃ এপেন কোষে, অপরজন ডাঃ এম সথ্য সিলান।একজন গলব্লাডার অপসারণ, হার্নিয়া এবং ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি, কোলোনোস্কপি, স্তন সার্জারি, থাইরয়েড এবং প্যারা থাইরয়েড সার্জারি ইত্যাদি সকল রোগীদের রোগ নির্নয় করে সঠিক পরামর্শ দেবেন।অপরজন প্রস্রাবের রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবে জ্বালা পোড়া,পিঠে অথবা তলপেটে ব্যথা,ক্যান্সার ব্লাডার,প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ না থাকা,প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, প্রস্টেট গ্ল্যান্ড এনলার্জমেন্ট প্রভৃতি বিভিন্ন রোগ নির্নয় করে সঠিক পরামর্শ দেবেন। কামতি হেল্থ কেয়ারে তাঁরা বসবেন সকাল দশটা থেকে। শিলিগুড়িতে চিকিৎসার নাম করে যাঁরা দিনের পর দিন রোগী সাধারণের কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েও সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না তাদের অনেকের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে তামিলনাড়ুর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা শিলিগুড়ি আসার কর্মসূচি নেওয়ায়।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :