নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ ওদের কারও বাবা কাগজ কুড়োয়। কারও মা লোকের বাড়ি কাজ করে। হতদরিদ্র ওদের পরিবারে দুবেলা উনুনে হাড়ি চড়ানোই এক কঠিন লড়াই। লেখাপড়াতো বিরাট বিষয়। অথচ এরমধ্যেও ওরা স্কুলের প্রাথমিক পাঠ নিতে যায় আই সি এস আর এস পরিচালিত কেন্দ্রে। ওরা এরমধ্যেও ভালো ছবি আঁকে। এরমধ্যেও ওরা জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কেও হতে চায় ডাক্তার, কেও হতে চায় শিক্ষক। কারও মনে ইচ্ছে, বড় পায়লট হওয়ার। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনের আগে কবি প্রণামের এক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার সানিয়া খাতুন, সাবা সাহানি, সোনা সাহানি, রীনা খাতুনের মতো এই শিশুরা এক এক করে তাদের বড় হওয়ার স্বপ্ন ছবি আঁকার মাধ্যমে মেলে ধরলো।
আইডিয়াল সেন্টার ফর সেলফ্ রিলায়েন্স এন্ড সোস্যাল রিসার্চ শিলিগুড়ি পুরসভার সাত ও কুড়ি নম্বর ওয়ার্ড এবং ফাসিদেওয়ার চটহাটে বস্তির পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠদান করে সৃজনশীলতা বিকাশে ছবি আঁকানোর তালিমও দিচ্ছে। ওই সেন্টারের তরফে বানি বল্লভ জানান, এইসব শিশু অনেক স্বপ্ন দেখে। ওদের মধ্যেও সৃজনশীলতা আছে। আর সেসব সৃজনকে উস্কে দেওয়া প্রয়োজন।
মঙ্গলবার একটি প্রয়াস নামে একটি সংস্থা সেই সৃজনশীলতাকে উস্কে দিলো। শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বিশ্ব কবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠিত হল বসে আঁকো। তাতে ৩৫ জন পিছিয়ে পড়া শিশু অংশ নেয়। তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও, এই ছিল ওদের ছবি আঁকার বিষয়। ওরা যে যার মতো নিজেদের স্বপ্নগুলো একে দিলো। একটি প্রয়াসের তরফে তনিমা ঘোষসরকার এবং সুস্মিতা দে জানালেন, ওদের এইসব ছবি নিয়ে তারা শীঘ্রই এক প্রদর্শনীর আয়োজন করবেন। সেখানে ওদের পুরস্কৃতও করা হবে। এদিন তারা সকলকেই উপহার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।