নিজস্ব প্রতিবেদন : সেই গ্রামে একসময় অপরাধমূলক কাজ প্রায়ই লেগে থাকতো।চুরি ডাকাতির সঙ্গে গ্রামের বহু মানুষ নেপাল সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবার করতেন। গ্রামে ছিলো না কোনো শিক্ষার আলো। অসুখ বিসুখ হলে মানুষেরা চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ঝাড়ফুক তুকতাক করতেন আর মহিলাদের প্রসব হোত বাড়িতেই। ফলে কখনো মহিলা, কখনো নবজাতকের মৃত্যু পর্যন্ত হোত এইরকম এক গ্রামে সত্তর এবং আশির দশক থেকে রেনেসাঁ নিয়ে আসার কাজে নামেন একজন চিকিৎসক। চিকিৎসকরা যে সমাজের বিরাট বন্ধু তার ব্যতিক্রমী প্রয়াস নেন সেই চিকিৎসক। তিনি গ্রামের মানুষকে চোরা কারবার বা অপরাধ কাজ ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কাজে নামেন। এরজন্য গ্রামে তিনি স্বনির্ভরতার জন্য কিছু হস্ত শিল্পের কাজ শুরু করাব।তৈরি করেন স্কুল।অসুখ বিসুখ হলে তুকতাক না করে তিনি সকলকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন আর শিক্ষা বিস্তার এবং কর্ম সংস্থানের জন্য তিনি সেই গ্রামে স্কুল স্থাপন এবং হাসপাতাল তৈরি করেন।আর অদ্ভুত ব্যাপার ধীরে ধীরে পাহাড় কোলের সেই গ্রামে আলো ফুটতে শুরু করে। চোরা কারবার বা অন্য অপরাধ ছেড়ে মানুষ স্বাভাবিক কাজে ফিরে আসতে থাকেন।কেও কৃষি কাজ,কেও পশু পালন,কেও চা বাগানের কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন।আর গোটা এলাকায় বৈপ্লবিক কাজ করেও বসে যাননি সেই চিকিৎসক। আজ ৭৩ বছর বয়সেও সেই চিকিৎসক বিনা পয়সায় রোগী দেখেন নকশালবাড়ির হোলি প্যালেস ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতালে। গোটা চিকিৎসক সমাজে তিনি এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। আর এত বড় কাজ করেও তিনি প্রচারের আলোয় আসতে চান না।নকশালবাড়ির লালপুল এলাকায় রয়েছে সেই হোলি প্যালেস ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতাল।তাঁর মতে,স্টেথো ধরেই একজন চিকিৎসক মানুষের শরীর শুধু ভালো রাখতে পারেন না,মানুষের মনও পরিবর্তন করতে পারেন। এখনো প্রতিদিন সকালে মর্নিং ওয়াকে বের হওয়ার সময় হোলি প্যালেস ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতালে পৌঁছে বিনা পয়সায় রোগী দেখেন এই চিকিৎসক। সেই ব্যতিক্রমী চিকিৎসক ডাঃ এস এস রাই বলেন,” যতদিন শরীরে প্রান থাকবে,মানুষের সেবা করে যাবো” । হোলি প্যালেস ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতালটি পরিচালনা করার জন্য ডাক্তার রাই এখন তার পুত্র সন্তান জনি সম্পং এর হাতে অর্পণ করেছেন। লালপুল সহ আশপাশের গ্রামগুলোতে বসবাসকারী মানুষেরা এখন বেশ উপকার পাচ্ছেন এই হোলি প্যালেস ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতাল থেকে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ