ছেলেমেয়েদের মনে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে রাখতে এই মায়েরা তুবড়ি তৈরি করেন

বাপি ঘোষ ঃ ওদের ঘরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রয়েছে। সেই ছেলেমেয়েদের মনের প্রদীপ ওরা জ্বালাতে চান। ওরা চান, ছেলেমেয়েরা ভালো শিক্ষা গ্রহণ করে যেনো মনের মধ্যে সব সময় আলো জ্বালিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে রাখার জন্য পাঠ্যপুস্তক কেনার প্রয়োজন, শিক্ষকদের টিউশন ফি দেওয়া দরকার, সব কিছুরতো খরচ রয়েছে। সেই খরচ আসবে কোথা থেকে? তাই এই মায়েরা দীপাবলির আগে বাজি কারখানায় বাজি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তাদের হাতে তৈরি তুবড়ি জ্বালিয়ে আলোর উৎসবে সবাই আনন্দ করবে। আর সেই আনন্দের টাকায় গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা কেউ বই কিনবে, কেউ শিক্ষকের টিউশন ফি দেবে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মহকুমার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ফাঁসিদেওয়া থানার লিউসিপাখরির হাতিরাম জোতে বাজি তৈরির সময় এমন আলোর বার্তাই দিলেন গ্রামের এই মায়েরা। তারা সকলেই উত্তরবঙ্গের প্রাচীন বাজি কারখানা রাজ ফায়ার ওয়ার্কসে কাজ করেন। সেই বাজি কারখানায় এখন তুমুল ব্যস্ততা। দমকল বিধি মেনে এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সব নিয়ম এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজি তৈরি হচ্ছে। সেই বাজি কারখানার প্রধান কর্ণধার জয়ন্ত সিংহ রায় জানালেন, পরিবেশের কথা চিন্তা করে সব বাজি তৈরি হচ্ছে। এবারে শুধুমাত্র পরিবেশ বান্ধব তুবড়ি তৈরি হচ্ছে বলে জয়ন্তবাবু জানালেন। জয়ন্তবাবুর সেই কারখানা জুড়ে শুধু সবুজ গাছপালা। আর সেই সবুজ গাছপালার মধ্যেই সবুজ বাজি তৈরিতে মেতেছেন বাজির কারিগরেরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে সেখানে বাজির চাহিদা আসে।জয়ন্তবাবুর সঙ্গে তার পুত্র রাজ সিংহ রায় এবং স্ত্রী ইলা সিংহ রায় পুরোদমে সহযোগিতা করেন। বাজিতে পরিবেশবান্ধব নিত্য নতুন কি করা যায়, তার ভিন্ন ধর্মী উদ্ভাবনী প্রতিভা রয়েছে জয়ন্তবাবুর। তাছাড়া তিনি নাট্যচর্চা করতে ভালোবাসেন। এবার এই পুজোর আগে কালো দুগ্গা নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি মুক্তি পায় মানব ঘোষের নির্দেশনায়। সেখানে কিন্তু জয়ন্তবাবু অভিনয় করেছেন। আর তার কারখানাতে শুটিংও হয়েছে। বাবুপাড়ার নাট্য প্রতিভা সন্তোষ দাসও সেই ফিল্মে অভিনয় করেছেন। জয়ন্তবাবু বহু বছর ধরে কৌতুক অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত বিভিন্ন মহলে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন–