নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ পুজোর থিম হিমশৈল কৈলাশ।প্যারিস প্লাস্টার, তুলা সহ অন্য সামগ্রী দিয়ে তৈরি হচ্ছে এই থিম। ফুটে উঠবে বিশ্ব উষ্ণায়ন। মানুষ নিজের সুখভোগের জন্য প্রকৃতির ওপর আঘাত হানছে।নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। ফলে বরফ গলছে।দূষন আর দূষনে আক্রান্ত এ বিশ্ব। এসবই শিলিগুড়ি আশ্রমপাড়ার জে টি এসে ফুটিয়ে তুলছেন মন্ডপ শিল্পী শ্যামল সরকার।আর বেশি দিন বাকি নেই পুজোর। ফলে শ্যামল এখন ব্যস্ত। জে টি এসের এই থিম ফোটাতে গিয়ে সেখানে কল্পনার স্বর্গলোকও তৈরি করছেন শ্যামল। তাতে দেখা যাবে দেবী দুর্গার কাছে অস্ত্র তুলি দিয়ে আত্মসমর্পণ করছে অসুর।এভাবে অশুভের বিদায় জানিয়ে শুভ শক্তির আগমন বা পৃথিবী ও তার প্রকৃতি সুস্থ রাখার আবেদন করা হবে থিমের মাধ্যমে।
আশ্রমপাড়ার জে টি এস ছাড়া সুভাষ পল্লীর সুভাস স্পোর্টিং ক্লাব এবং ডুয়ার্সের ক্রান্তি এলাকার একটি পুজোর থিমও ফুটে উঠছে শ্যামলের হাত দিয়ে।সুভাস স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোর থিম অন্তরালে। সে থিমের বিষয় আকর্ষনের জন্য এখন প্রকাশ করা হচ্ছে না।তবে ক্রান্তিতে পাটকাঠি, বাঁশ প্রভৃতি দিয়ে হস্ত শিল্প মেলে ধরা হবে।
শিলিগুড়ি অরবিন্দ পল্লীতে বাড়ি শ্যামলের। পুজো এলেই তার পুজোর থিমের জন্য হাতের কাজ পান অনেক মহিলা। আর এতে তাদের স্বনির্ভরতাও হয়। নবৃবইয়ের দশক থেকে শিলিগুড়ির পুজো সংস্কৃতিতে একটি উল্লেখযোগ্য নাম শ্যামল। একসময় ঝুলনের কাজও করতেন।তারপর ছবি আকা শেখেন।বলরাম সরকার বা তুলিকার কাছে ছবি আকার হাতে খড়ি।ছোট থেকেই নেশা ছবি আকার।পুজোর কাজ করতে গিয়ে একসময় শহরে টাইটানিক,লন্ডন ব্রীজ, কার্গিল যুদ্ধ, মঙ্গলদ্বীপ,আইফেল টাওয়ার সহ আরও অনেক থিমের কাজ করে সাড়া ফেলে দেন। প্রায় প্রতি বছরই তার হাতে তৈরি মন্ডপ সজ্জা বিচারকদের বিচারে অনেক পুরস্কার নিয়ে এসেছে। যদিও শ্যামল থেকে যায় নেপথ্যে। বছরের অন্য সময়ে কচিকাচাদের ছবি আকার স্কুল চালায় শ্যামল।নাম চিত্রমালা আর্ট স্কুল।বহু ছেলেমেয়ের ছবি আকার আগ্রহকে উস্কে দিয়েছে শ্যামল। পুজোর এই সময়টায় তার কাছে থিম ফুটিয়ে তোলাটাই বড় আর্ট।পুজোর ভিড়ে হাজার হাজার মানুষ তার অসাধারন শিল্পকর্ম দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেও অনেকেই জানতে পারেন না তার শিল্পকর্মের কথা। তবুও শ্যামল বলে, দর্শকরা খুশি হয়,বিভিন্ন ক্লাব পুরস্কৃত হয় সেটাই বড় আনন্দ।