নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ একসঙ্গে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন কিষানগঞ্জের ইয়ম ইয়াম হুসেনের স্ত্রী। তিন কন্যা সন্তান হলেও বিষয়টিকে সংসারে বোঝা বা চাপ হিসাবে তিনি দেখতে চান না। বরঞ্চ তার মতে, এই কন্যা সন্তানেরাা আল্লা বা ঈশ্বরেরই দান।
শিলিগুড়ি আশ্রমপাড়া পাকুড়তলা মোড়ে প্রখ্যাত স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জি বি দাসের নার্সিংহোমে ওই সংখ্যালঘু দম্পতির তিন কন্যা সন্তান হয়েছে। তিনটিই এখন সুস্থ রয়েছে। তবে তিন শিশুই ২৮ সপ্তাহে জন্মগ্রহণ করেছে। আর তাদের ওজনও অনেক কম। দুই শিশুর ওজন এক কিলোগ্রাম। বাকি এক শিশুর ওজন ছশো গ্রাম। তাদের এখন মায়ের বুকের দুধই পান করানো হচ্ছে। তবে তা চামচে করে। শিশুরা এতটাই দুর্বল যে তাদের পক্ষে এখনও মায়ের দুধে মুখ লাগিয়ে তা পান করার মতো শক্তি হয়নি। তাই তাদেরকে মায়ের বুকের দুধ চামচের মাধ্যমে পান করানো হচ্ছে।
বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জি বি দাস মঙ্গলবার তার নার্সিংহোমে সাংবাদিকদের জানান, ওই সংখ্যালঘু মহিলা বিয়ের দশ বছর পরও সন্তান ধারন করতে পারছিলেন না। শেষে তিনি কিষানগঞ্জে আই ভি এফ পদ্ধতির দ্বারস্থ হলে গর্ভবতী হন। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসক জানতে পারেন, তিন সন্তানের জননী হতে চলেছেন ওই মহিলা। ফলে এক সন্তানকে ইঞ্জেকশন দিয়ে নষ্ট করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই মহিলা তা করতে রাজি হননি। এরপর তিনি তার স্বামীকে নিয়ে শিলিগুড়ি এসে ডাক্তার জি বি দাসের দ্বারস্থ হন। ডাক্তার জি বি দাসের তত্বাবধানে তখন প্রসব হয়। নিউ রামকৃষ্ণ সেবা সদনের চিকিৎসক ডাঃ গোপাল খেমকা বিশেষ চিকিৎসার সাহায্যে তিন কন্যা সন্তানকেই সুস্থ করে তোলেন যা একটি নজির। শিশুদের শরীরে কিছু ইঞ্জেকশনও প্রয়োগ করা হয়। ডাঃ জি বি দাসের পুত্র ডাঃ বিনায়ক দাসও এই চিকিৎসায় বিশেষভাবে সহায়তা করেন। নার্সিং হোমের বিভিন্ন নার্স ও কর্মীও তিন শিশু কন্যা বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। সংখ্যালঘু ওই দম্পতি আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় তাদের চিকিৎসা খরচেও অনেক ছাড়ের বন্দোবস্ত করে দেন ডাক্তার দাস।